বজ্রপাতে তিন জেলায় ৭ জনের মৃত্যু
Share on:
দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। শনিবার (১৮ মে) এক দিনে বজ্রপাতে সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সকাল থেকে নিয়ে বিকেল পর্যন্ত দেশের তিনটি জেলায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
নিহতদের মধ্যে নরসিংদীতে মা-ছেলেসহ চারজন, টাঙ্গাইলে দুই ভাই এবং গাজীপুরে এক গৃহবধূ মারা গেছেন।
নরসিংদীতে বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। শনিবার (১৮ মে) সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আলোকবালীতে ও হাজীপুরে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, নরসিংদীতে জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ তিনজন মারা গেছেন। একই সময় শহরের হাজীপুরে বজ্রপাতে মারা গেছেন আরও একজন।
মৃতরা হলেন, আলোকবালী গ্রামের কামাল মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৩৫), তার ছেলে ইমন মিয়া (১০) ও ধানকাটা শ্রমিক রায়পুরার বাঘাইকান্দি এলাকার হাতেম আলীর ছেলে কাইয়ুম মিয়া (২০)। হাজীপুরে মৃত ব্যক্তির নাম মোসলেহ উদ্দিন (৫৫)।
নিহত সুফিয়া বেগমের আহত স্বামী কামাল মিয়া বলেন, সুফিয়া, ইমন ও কাইয়ুমসহ আরও একজন সকাল থেকে মাঠের জমিতে ধান কাটছিলেন। ১০টার দিকে হঠাৎ প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় তারা শরীর পলিথিন দিয়ে ঢেকে বৃষ্টি থেকে রক্ষার চেষ্টা করেন। তখন হঠাৎ করে বজ্রপাত হলে তারা গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, একই সময় শহরতলীর হাজীপুরে বজ্রপাতে মারা গেছেন চকপাড়ার মোসলেহ উদ্দিন।
নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ বলেন, পৃথক ঘটনায় বজ্রপাতে চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ মে) সকাল আটটার দিকে উপজেলার বীরবাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হচ্ছেন- আফজাল হোসেন এবং মো. আমির হোসেন। তাদের বাড়ি দিনাজপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সদরে। তারা দু’জন সম্পর্কে আপন খালাত ভাই।
বীরবাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন জানান, সকালে কয়েকজন শ্রমিক হযরত আলীর ক্ষেতে ধান কাটতে যান। এ সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও চারজন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গাজীপুরের শ্রীপুরে গলদাপাড়া গ্রামে ধান শুকানোর সময় বজ্রপাতে ফাতেমা আক্তার নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ফাতেমা আক্তার (৪৫) উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামের মো. নূর হোসেনের স্ত্রী।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফাতেমা আক্তার শনিবার সকালে তার বাবার বাড়িতে ধান শুকানোর কাজ করছিলেন। দমকা বাতাস ও বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে দেখে তিনি উঠান থেকে ধান উঠাতে যান। এ সময় বজ্রপাত হলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ফাতেমা। পরে তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাবিনা আক্তার জানান, ওই নারীকে সকাল সাড়ে ১০দিকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। বজ্রপাতে তার শরীরের বাম পাশ ঝলসে গেছে।
এনএইচ