দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জামায়াতের উদ্বেগ
Share on:
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এক বৈঠকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
বুধবার (১২ জুলাই) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। সেখানে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয় :
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্য যেভাবে বাড়ছে, জনসাধাণের আয় একইভাবে বাড়ছে না। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পাঁচ ভাগ বাড়িয়ে দিয়ে আগামী নির্বাচনে সরকার নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার ব্যবস্থা করেছে। দেশের বাকি সাধারণ জনগণের ওই বেতন বৃদ্ধিতে কোনো লাভ হবে না। সীমিত আয়ের সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারীদের মাসিক বেতনে তাদের সংসার দু’সপ্তাহও চলছে না। সরকার ভোটারবিহীন নির্বাচন করার ফন্দি-ফিকির নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। জনগণের দুর্ভোগ-দুর্দশা লাঘবে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বর্তমানে চাল ৬০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, ডাল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, লবন ৪৫ টাকা, চিনি ১৪৫ টাকা, সোয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৭৯ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, শুকনা মরিচ ৬০০ টাকা, শুকনা হলুদ ৩০০ টাকা, আদা ৩০০ টাকা, জিরা এক হাজার ১০০ টাকা, টমেটো ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, রুই-কাতলা মাছ ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা, ইলিশ এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, গরুর গোশত ৮০০ টাকা, খাসির গোশত এক হাজার ২০০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় হচ্ছে। এ অবস্থায় জনগণের জীবন ধারণ অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। গত দু’মাস আগের তুলনায় বর্তমানে প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
সরকারি দলের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ইচ্ছামতো দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে অস্বভাবিকভাবে মুনাফা লাভ করে দেশের ১৭ কোটি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। অতি সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জাতীয় সংসদে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে তার অপারগতার কথা স্বীকার করে বলেছেন, ‘ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না। তাদের সিন্ডিকেট ভাঙতে গেলে সমস্যা আরো বাড়বে।’ এ থেকেই পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকার ও সরকারি দলের অতি মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরাই দায়ী।
তাই অবিলম্বে সরকারি দলের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কমিয়ে জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে এনে তাদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি