গাজীপুরে দুইটি কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ৬ কারখানা বন্ধ
Share on:
গাজীপুরে বিভিন্ন দাবিতে দুইটি কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
বুধবার (৯ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী এলাকায় যমুনা গ্রুপের যমুনা ডেনিম ও কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিচালা এলাকার পূর্বাণী গ্রুপের একটি কারখানায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন।
এ সময় যমুনা গ্রুপের যমুনা ডেনিম গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিংয়ের শ্রমিকরা কোনাবাড়ী-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। আর পূর্বানী কারখানার শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। শ্রমিক আন্দোলন শুরু হওয়ার পর বেশ কিছুদিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তার মধ্যে এখনো ৬টি কারখানা বিভিন্ন কারণে বন্ধ রেখেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় একই কম্পাউন্ডের ভেতরে থাকা যমুনা গ্রুপের যমুনা ডেনিম গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিং কারখানার শ্রমিকরা সকাল ৮টায় হাজিরা দিয়ে কাজে যোগ দেন। কিছু সময় পর কাজ বন্ধ করে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান করে বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধিসহ বেশকিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কোনাবাড়ী-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উভয়দিকে যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন ওই সড়কে চলাচলকারীরা। খবর পেয়ে কোনাবাড়ী থানার পুলিশ ও গাজীপুর শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করে। পরে শ্রমিকরা দুপুর ১২টার দিকে আঞ্চলিক সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কারখানা শ্রমিক মেহেদী হাসান বলেন, আমাদের আশপাশের সব কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হলেও আমাদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়নি। হাজিরা বোনাস বাড়ানো হয়নি এমনকি বাৎসরিক বেতনও বাড়ানো হচ্ছে না।
অপর শ্রমিক আব্দুল আজিজ বলেন, আমাদের দাবি-দাওয়া মেনে না নিলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
কোনাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, বেশকিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে যমুনা গ্রুপের শ্রমিকরা সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। কোনাবাড়ী-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করলে তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিচালা এলাকায় পূর্বানি গ্রুপের করিম টেক্সটাইলের শ্রমিকরা হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল, বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধিসহ প্রায় ২৬-২৭টি দাবি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। দাবির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আজ বুধবার সকাল থেকে ফের শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাল মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে আগে থেকেই ঘটনাস্থলে থাকা শিল্প পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে রাখেন। শ্রমিকরা কারখানার সামনেই অবস্থান নিয়ে অনেকেই বিক্ষোভ করছেন আবার অনেকেই সড়কের সাবলাইনের ওপর বসে আছেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে মালিকপক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, পূর্বানী গ্রুপের শ্রমিকরা গত দুই দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন। আজ সকালে আবারও তারা বিক্ষোভ করলে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্বানী কারখানায় শ্রমিকদের নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা চলছে। মালিকপক্ষ আন্তরিক, আশা করি সমাধান হয়ে যাবে। আর যমুনা গ্রুপের শ্রমিকরা এখনো বিক্ষোভ করছেন। কীভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়টি দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন কারণে গাজীপুরের ৯টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে তিনটি কারখানা চালু হয়ে গেছে। তবে আজও জেলার ছয়টি কারখানা বন্ধ রয়েছে।
এনএইচ