tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ১১ জানুয়ারী ২০২৩, ১৭:২৯ পিএম

দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছি : ডা. তাহের


প

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, দেশের মানুষ যখন অধিকারহারা হয়েছে আমরা তাদের দাবি আদায়ে লড়াই সংগ্রাম করেছি।


বুধবার (১১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ‘১১ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, হাফিজুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রান্ত হলেও এদেশে এখনো সুষ্ঠু চিন্তা বা রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানুষের কথা বলার অধিকার আদায়ের জন্য, ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য এখনো দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী সংগ্রাম করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যারা দেশ শাসন করার সুযোগ পেয়েছেন তারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। অথবা হয়তো তারা তা করতে চাননি। তারা বাংলাদেশের মানুষের অধিকার, গণতন্ত্র, আমাদের কালচার স্বকীয়তা রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারেননি। সুতরাং বাংলাদেশের জন্য আজকে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন দেশপ্রেমিক আদর্শবাদী যোগ্য নেতৃত্বের। যারা জনগণের আশা পূরণ করতে পারবে। জনগণের এই প্রত্যাশা পুরণের জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে।

সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, জামায়াতের ইতিহাস বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সব সময়ে সত্যের উপরে প্রতিষ্ঠিত আছে। জামায়াত কোনো দলের সাথে লেজুড়বৃত্তি করে না। যখন যে দল অন্যায় করেছে, তাদের সমালোচনা করেছে জামায়াত। যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তাদের বিরোধীতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের মূলনীতি যারা দেশের গণতন্ত্র হরণ করবে, অন্যায় করবে, লুটপাট করবে, দুর্নীতি করবে, সেখানেই জামায়াত তার আদর্শের বলে বলীয়ান হয়ে সংগ্রাম করবে।

তিনি বলেন, কোনো একটি ষড়যন্ত্র এক দিনে বুঝা যায় না। দীর্ঘ দিন ধরে পরিকল্পনা করে ১১ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠা দিয়ে রাজপথে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করে যার যাত্রা শুরু হয়েছিল তা আজ দিবালোকের মতো পরিস্কার।

জামায়াতের এ নায়েবে আমির বলেন, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি আইএমএফ অর্থাৎ ইয়াজউদ্দিন-মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন এই তিনজনের নেতৃত্বে বাংলাদেশে মিলিটারি ‘কু’-এর মাধ্যমে একটি সিভিল এ্যাক্ট বাই আর্মি নামীয় সরকার দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়। যার অস্তিত্ত্ব বা কাঠামো রাজনৈতিক কোনো তত্ত্বে বিশ্ববাসী দেখেনি। পলিটিক্যাল সাইন্সে যে ধরনের সরকার পরিবর্তনের নীতি-নিয়ম বলা আছে তার কোনটির সাথেই ১১ জানুয়ারির ওই অবৈধ সরকারের কোনো মিল এর আগে কখনো প্রত্যক্ষ করেনি।

তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ঘোষণা দিয়ে বলেছে ১১ জানুয়ারির সরকার তাদের আন্দোলনের ফসল। এই দলটি সব সময়ে ফ্যাসিবাদী আচরণ করে এসেছে। তারা ক্ষমতা গ্রহণের জন্য যেকোনো কিছুকেই গ্রহণ করতে পারে। আজকে যদি সেই দিনের ঘটনাটি না ঘটতো তাহলে দেশের ইতিহাস আরো সুন্দর হতে পারত। তিনি পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে যারা ১১ জানুয়ারিতে দেশের গণতন্ত্র হত্যা করেছিল তাদের বিচারের দাবি জানান।

ডা. তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী এই দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করছে। আমরা জাতিকে এই কলঙ্কজনক দিনটি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। দেশ পরিচালনায় একটি সঠিক ধারার সুষ্ঠু রাজনীতি চর্চার ক্ষেত্র গড়ে তুলতে চাই বলেও জানান তিনি।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের মনোবাসনা পূরণের জন্যই ক্ষমতাগ্রহণ করেছিল। মূলত ২৮ অক্টোবরের ধারাবাহিকতায় সন্ত্রাসী কায়দায় দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে ১১ জানুয়ারির মঈন উদ্দিন ফখরুদ্দিনের সরকার ক্ষমতায় বসে।

তিনি বলেন, আজ জনগণের ভোটাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। দুর্নীতি-দুঃশাসন গোটা জাতিকে গ্রাস করেছে। মানুষের জানমাল ও ইজ্জতের কোনো নিরাপত্তা নেই। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল থেকে আজ দেশের মানবাধিকারপরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক।

মহানগর আমির বলেন, আওয়ামী লীগ পর পর তিন মেয়াদে সরকারে থেকে লুটপাট, অনিয়ম, দুর্নীতি করে দেশকে নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। তারা আবারো অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাই। আগামী দিনে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করা। তাই দেশের গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে এবং জনগণের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, এদেশে সাংবিধানিক পদ্ধতিতে বরাবরই জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য জামায়াত নানাবিধ কার্যক্রম করে থাকে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়, নিয়মতান্ত্রিকভাবে এবং আল্লাহ তায়ালার দেয়া বিধানের আলোকে একটি সুখীসমৃদ্ধ দেশ গঠনে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। জনগণের এসব অধিকার আদায়ের আন্দোলনে একটি মহল সব সময়ে জামায়াতের বিরোধীতা করার জন্য উঠে পড়ে লেগে আছে। যারা গণতন্ত্রের কথা মুখে বললেও বাস্তবায়নে নেই কেবল তারাই আমাদেরকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য এসব ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার মূল অর্জন গণতন্ত্রকে হারিয়ে দেশ আজ এক অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে যাত্রা শুরু করেছে। বিরোধী মতের লোকজনকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরাধীনতার শিকল থেকে জাতিকে মুক্ত করে সুষ্ঠুধারায় রাজনৈতিক চর্চা করতে হবে।

তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষা এবং দেশ গড়ার প্রয়োজনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

এমআই