ইমরানের কারাদণ্ডের রায়ে গুরুতর ত্রুটি ছিল: পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট
Share on:
তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দেওয়া তিন বছরের কারাদণ্ডের রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। ওই রায়ে গুরুতর ত্রুটি ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ।
বুধবার (২৩ আগস্ট) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে বলে, প্রধান বিচারপতি ওমর আতা বান্দিয়াল তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, দায়রা আদালত একদিনে রায় দিয়েছে, যেটি সঠিক ছিল না। তাই প্রথম দৃষ্টিতেই দায়রা আদালতের রায়ে ত্রুটি ধরা পড়েছে।
প্রধান বিচারপতি বান্দিয়াল ছাড়াও তিন সদস্যের এ বেঞ্চে রয়েছেন বিচারক জামাল খান মান্দোখালিল ও বিচারক সৈয়দ মাজহার আলী আকবর নকবী। বেঞ্চটি গত ৪ আগস্ট ইসলামাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ইমরান খানের আপিলটি আমলে নিয়েছে।
গত ৪ আগস্ট ইসলামাবাদ হাইকোর্ট বলেছিল, তোশাখানা মামলা গ্রহণযোগ্যতার যে রায় দায়রা আদালত দিয়েছেন, তা ‘অবৈধ। এছাড়া ইসলামাবাদ হাইকোর্ট নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেন, ইমরান এ মামলা চলমান রাখার বিরুদ্ধে যে আপিল করেছেন সেটির ব্যাপারে যেন শুনানি করা হয়। তবে মামলাটি অন্য আদালতে স্থানান্তরের আপিলটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে, পরের দিন ৫ আগস্ট বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ারের দায়রা আদালত ইমরানকে তোশাখানা মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলেন যে, ইমরান খান তার আত্মপক্ষ সমর্থনে যে সাক্ষীদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে চেয়েছিলেন, তা রেকর্ড না করেই কেন ওই দায়রা আদালত তাড়াহুড়ো করে রায় ঘোষণা করলেন।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সৈয়দ মাজহার আলী আকবর নকবী বলেছেন, দায়রা আদালত ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করেছেন।
এদিকে তোশাখানা দুর্নীতি মামলার দণ্ড বাতিলের জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আইনজীবীর মাধ্যমে আপিল করেছেন ইমরান খান। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) এর ওপর শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী উপস্থিত না হওয়ায় শুনানি হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ইমরান খানের আইনজীবীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। তবে আদালত আবার আগামী সোমবার (২৮ আগস্ট) শুনানির নতুন তারিখ ঠিক করেছেন। এদিকে, প্রধান বিচারপতি বান্দিয়ালের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে জানান, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট এ বিষয়ে রায় দেওয়া পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করবেন। এরপর প্রয়োজন হলে ব্যবস্থা নেবেন।
গত ৫ আগস্ট তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে তিন বছর কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে তাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
এমআই