বই খুলছেন দেখছেন চলে যাচ্ছেন, বিক্রি কম
Share on:
এবার বইমেলা শুরুর পরই পড়েছে সাপ্তাহিক ছুটি। এতে শুরুর দিনের উচ্ছ্বাসে ভাটা পড়েনি।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) তৃতীয় দিনেও পাঠক-দর্শনার্থীতে মুখরিত বইমেলা। শিশুপ্রহর ঘিরে মেলায় দিনভর কচিকাঁচাদের ভিড়। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই ছুটির দিনে এসেছেন সব বয়সী মানুষ। সবমিলিয়ে বইমেলায় বেশ ভিড়।
পাঠক-দর্শনার্থীদের এমন আনাগোনার সঙ্গে বিক্রির কোনো মিল নেই বলে জানিয়েছেন প্রকাশক ও বিক্রেতারা। প্রিয়মুখ প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হোসেন জানালেন, ‘এবার শুরু থেকে মেলায় মানুষ আসছে, ভালোই লাগছে। তারা বই খুলছেন, দেখছেন, চলে যাচ্ছেন। ভিড় থাকলেও বিক্রি সেই রকম বিক্রি নেই।’
শুরু থেকেই মেলায় ভিড় দেখে বেশ আশাবাদী উৎস প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী মুস্তফা সেলিম। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার মেলা শুরু হলো। এরপর শুক্র ও শনিবার। এ দুদিন অনেক শিশু মেলায় আসছে। ওরা গল্পের বই, কমিকস, রূপকথা এগুলো কিনছে। মেলায় শিশুদের উপস্থিতি আশা জাগাচ্ছে, ওরা বইমুখী হচ্ছে।’
তেজগাঁও থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে বইমেলা এসেছে লিটলস ফ্লাওয়ার কিন্ডারগার্টেনের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসাইবা ইবনে মিসবাহ। বাবার কাঁধে চড়ে দূর থেকে সিসিমপুর দেখেছে সে। এরপর গল্পের বই কিনেছে। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই বাবার সঙ্গে বাসায় ফিরছে মোসাইবা। মেলা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সে জানান, দুটি বই কিনেছে। একটি ইংরেজি গল্পের বই। আরেকটি রূপকথার গল্প।
মোসাইবা বলে, ‘সিসিমপুর দেখেছি, ভালো লাগছে। গল্পের বই পড়তে খুব ভালো লাগে। বাবা দুটো বই কিনে দিয়েছেন। আজকে রাতে বাসায় গিয়ে পড়বো। কালকে স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের গল্পটা শোনাবো।’
গৃহশিক্ষকের সঙ্গে মেলায় এসেছে ছয় বছরের রাহান তুর্য। সে বলে, ‘আব্বু-আম্মু একটু অসুস্থ। এজন্য স্যারের সঙ্গে মেলায় এসেছি। ঘুরছি অনেক সময়। একটা ভুতের গল্পের বই কিনেছি। রূপকথা ও ভুতের গল্প পড়তে মজা লাগে।’
শনিবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি চত্বর ঘুরে দেখা যায়, লেখক-পাঠক ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত বইমেলা। স্টলে স্টলে ভিড়। ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন পাঠকরা। কেউ বই কিনছেন, কেউ ছবি তুলছেন। অনেকে আবার বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, কিছু বই আজকে পছন্দ হয়েছে। সেগুলো কেনা হয়নি। এগুলো লিস্ট করে রাখছি। ধীরে ধীরে কিনবো।
মুহিব নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘আমি আজই প্রথম এসেছি। উত্তরা থেকে মেট্রোরেলে চড়ে আসলাম। শুক্রবার ছুটির দিনে আসতে চেয়েছিলাম, মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় আসা হয়নি। এসে দেখছি শুরু থেকেই এবার মেলায় অনেক ভিড়।
এদিকে, পাঠকরা পছন্দের লেখক ঠিক করে এসে বই খুঁজছেন বলে জানিয়েছেন অনেক প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মী। পছন্দের লেখকের বই যেখানে আছে, সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন তারা।
অন্যপ্রকাশের বিক্রয়কর্মী প্রান্ত বলেন, ‘এ বছর অনেক নতুন বই এসেছে। কেনাকাটা সেভাবে এখনো জমেনি। তবে সাদাত হোসাইনের বইয়ের জন্য পাঠকরা বেশ ভিড় করছেন।’
এমএইচ