গোপীবাগে ট্রেনে আগুন : অবশেষে পরিবারের কাছে চার মরদেহ হস্তান্তর
Share on:
রাজধানীর গোপীবাগে ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে মারা যাওয়া চারজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে রেলওয়ে থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গ থেকে পুড়ে যাওয়া মরদেহগুলো ডিএনএ ম্যাচ করিয়ে তাদের পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
আজ পরিবারের কাছে নাতাশা জেসমিন, এলিনা ইয়াসমিন, আবু তালহা ও চন্দ্রিমা চৌধুরীর মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস জানান, ঘটনার পর পুড়ে যাওয়া চারটি মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য রাখা হয় ঢাকা মেডিকেলের মর্গে। তাদের ডিএনএ প্রফাইল ম্যাচিং করায় দীর্ঘ এক মাস ১০ দিন পর চারজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহত তালহার মামা মনিরুল ইসলাম বলেন, সৈয়দপুর নীলফামারীর বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল তালহা। ওইদিন ফরিদপুর থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেসে ঢাকায় এসে সৈয়দপুর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেনে ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে এসেছিল তালহা ছিল মেজো। আমরা তার মরদেহটি দেশের বাড়ি রাজবাড়ির কালুখান্দি থানার গাংবথুন্দিয়া গ্রামে দাফনের জন্য নিয়ে যাচ্ছি।
নিহত নাতাশা জেসমিনের ভগ্নিপতি এহতেশাম নেওয়াজ বলেন, মাত্র এক বছর আগে বিয়ে হয় নাতাশার। সে পুরান ঢাকার ওয়ারী অ্যাকাডেমিয়া ইংলিশ স্কুলে শিক্ষকতা করত। ঘটনার সময় তার শ্বশুর বাড়ি ফরিদপুর থেকে ঢাকায় ফিরছিল। পথে ভাঙ্গা থেকে ওই ট্রেনে ওঠেন কমলাপুরের উদ্দেশে। তারপর ঘটে এই দুর্ঘটনা। আমরা তার মরদেহটি দাফনের জন্য পুরান ঢাকার নারিন্দা এলাকায় নিয়ে যাচ্ছি।
নিহত চন্দ্রিমা চৌধুরী সুমির মরদেহ বুঝে নেন তার বড় ভাই দীপঙ্কর চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা ঢাকার ফার্মগেটের ইন্ডিরা রোডে থাকি। সুমির মরদেহ দাফন করার জন্য রাজবাড়ী সদরের রঘুনাথপুরে নিয়ে যাচ্ছি।
নিহত এলিনা ইয়াসমিনের মরদেহ বুঝে নেন তার স্বামী সৈয়দ হোসেন সাজ্জাদ। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমাদের ছেলে সৈয়দ আরফানের বয়স ছিল মাত্র ছয় মাস। এখনো সে ঠিকভাবে মায়ের মুখ চিনে উঠতে পারেনি। তার আগেই ঘটে গেল এই মর্মান্তিক ঘটনা। বড় হলে তাকে কীভাবে বোঝাবো আমি নিজেও বুঝে উঠতে পারছি না। এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এনএইচ