tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
খেলাধুলা প্রকাশনার সময়: ০৯ মার্চ ২০২৪, ১৯:০৪ পিএম

বাংলাদেশকে ডুবিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শ্রীলঙ্কার


0 (1)

পাঁচ দিন আগে ফিরে যাওয়া যাক। সিরিজের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কী দুর্দান্ত লড়াই করেছিল বাংলাদেশ।


২০০-র বেশি রান তাড়ায় মাত্র তিন রানে হার। তার ঝাল মিটিয়ে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে লঙ্কানদের রীতিমতো উড়িয়ে দেন শান্ত-হৃদয়রা। সমতা ফেরানোর পর শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেওয়ার প্রত্যয় ছিল ক্রিকেটারদের কণ্ঠে।

কথায় কাজে মিল তো হলোই না, উল্টো দুমড়ে-মুচড়ে গেল সফরকারীদের সামনে। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষটিতে শনিবার (৯ মার্চ) বাংলাদেশকে ২৮ রানে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজও টস জিতে বোলিং বেছে নিয়েছেন স্বাগতিক অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে সাত উইকেটে ১৭৪ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ১৯.৪ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ থামে ১৪৬ রানে।

আগের দুই ম্যাচের পারফরম্যান্স বিচারে আজ লক্ষ্য তেমন বড় ছিল না। ১৭৫ চ্যালেঞ্জিং বটে, তবে অদম্য বাংলাদেশের কাছে তা কঠিন হওয়ার কথা ছিল কি? না থাকলেও হয়েছে সেটিই। মুড়ি-মুড়কির মতো উইকেট হারায় শান্তর দল। আগের টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন লিটন ও সৌম্য সরকার। তবে, আজ ব্যর্থ লিটন। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে স্কয়ার লেগে দাসুন শানাকার ক্যাচে পরিণত হন তিনি। তার ব্যাট থেকে আগে ১১ বলে মাত্র সাত রান।

বিপর্যয়ের সেই যে শুরু হয়, থামার নাম নেই। লিটনকে হারানোর পর মাঠে নামেন অধিনায়ক শান্ত। নুয়ান থুসারার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ছয় বলে এক রানের বেশি করতে পারেননি আগের ম্যাচের নায়ক। পরের বলেই ফিরে যান তাওহিদ হৃদয়। বোল্ড হয়ে গোল্ডেন ডাকের লজ্জায় পড়েন হৃদয়। তাকেও ফেরান থুসারা।

হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান লঙ্কান এই পেসার। চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে পরপর বোল্ড করা থুসারার মুখোমুখি হন মাহমুদউল্লাহ। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি। আম্পায়ার আউট দিলে রিভিউ নেন তিনি। তবে, বাঁচতে পারেননি। টিভি আম্পায়ার আউট দিলে হ্যাটট্রিকের উল্লাসে মাতেন থুসারা। মাহমুদউল্লাহ ফেরেন শূন্য হাতে।

১৫ রানে চার উইকেট খুইয়ে ম্যাচের মোমেন্টাম হারায় বাংলাদেশ। এরপর আর কেউই পারেননি থিতু হতে। ১০ বলে ১১ করে থুসারার বলেই বোল্ড হন সৌম্য। শেষ ভরসা হিসেবে ছিলেন জাকের আলী অনিক। কিন্তু, ১৩ বলে চার রান করে লঙ্কান অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙার বলে লেগ বিফোর হন জাকের।

স্কোরবোর্ডে ৩২ রান উঠতে নেই ছয় উইকেট। সেখান থেকে জয়ের আশা করা বাতুলতা। তবু, শেখ মেহেদি ও রিশাদ হোসেন চেষ্টা করেছিলেন। দুজন মিলে ৪৪ রানের জুটি গড়েন। ১৯ বলে ২০ রান করা মেহেদিকে বোল্ড করে ফের লঙ্কান শিবিরে স্বস্তি আনেন হাসারাঙা।

বাকি সময়টুকু লড়েছেন রিশাদ। যদিও, একা হাতে জয়ের জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। থেমে থাকেননি তিনি। যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, লঙ্কান বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়েছেন। সাত ছক্কায় ৩০ বলে ৫৩ রান করেন রিশাদ। মাহিশ থিকসানাকে স্ট্রেইটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন সাদিরা সামারাবিক্রমার হাতে। চেষ্টার কমতি রাখেননি তাসকিন আহমেদও। তবে, তার ২১ বলে ৩১ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধান কমাতে পেরেছে।

এর আগে দুই ওপেনার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেয় লঙ্কানরা। যদিও, তাদের জুটি বড় হয়নি। দলীয় ১৮ রানের মাথায় তাসকিনের বলে পুল করতে গিয়ে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ তুলে ফেরেন সিলভা। ১২ বলে আট রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

ইনিংসের শুরুতেই ধনঞ্জয়াকে ফেরালেও কুশল মেন্ডিসের প্রতিরোধ ভাঙতে পারছিল না বাংলাদেশ। এরপর একে একে আরও তিনটি উইকেট হারালেও ক্রিজে থিতু হয়ে ছিলেন মেন্ডিস। হাফসেঞ্চুরি ছাড়িয়ে তিনি ছুটছিলেন সেঞ্চুরির পথে। তার সেঞ্চুরি আটকে দিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি দেন তাসকিন আহমেদ। ৫৫ বলে ৮৬ রান করে বিদায় নেন লঙ্কান ওপেনার। তাসকিনকে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ধরা পড়েন সৌম্যর হাতে।

আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়া অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস দাঁড়াতে পারেননি এদিন। সাত বলে ১০ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন ম্যাথুস। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফেরা অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙার ব্যাট থেকে আসে ১৩ বলে ১৫ রান। শিকার হন মুস্তাফিজুর রহমানের, ক্যাচ নেন শরিফুল ইসলাম।

বড় সংগ্রহের আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত লঙ্কানরা থামে ১৭৪ রানে। লাল-সবুজের জার্সি হাতে দুটি করে উইকেট পান তাসকিন ও রিশাদ। মুস্তাফিজ ও শরীফুল নেন একটি করে উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলঙ্কা : ২০ ওভারে ১৭৪/৭ (ধনঞ্জয়া ৮, কুশল ৮৬, কামিন্দু ১২, হাসারাঙা ১৫, আসালাঙ্কা ৩, ম্যাথুস ১০, শানাকা ১৯, সামারাবিক্রমা ৭* ; শরিফুল ৪-০-২৮-১, তাসকিন ৪-০-২৫-২, শেখ মেহেদি ৩-০-২২-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৪৭-১, রিশাদ ৪-০-৩৫-২, সৌম্য ১-০-১১-০)।

বাংলাদেশ : ১৯.৪ ওভারে ১৪৬/১০ (লিটন ৭, সৌম্য ১১, শান্ত ১, হৃদয় ০, মাহমুদউল্লাহ ০, জাকের ৪, মেহেদি ১৯, রিশাদ ৫৩, তাসকিন ৩১, শরিফুল ৪, মুস্তাফিজ ৭*; ম্যাথুস ১.১-০-৫-০, ফার্নান্দো ৪-০-৩৯-০ , ধনঞ্জয়া ০.৫-০-২-১ , থুসারা ৪-১-২০-৫, হাসারাঙা ৪-০-৩২-২, থিকসানা ৪-০-৩৫-১, শানাকা ১.৪-০-১১-১)।

এমএইচ