tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
শিক্ষা প্রকাশনার সময়: ০৩ নভেম্বর ২০২২, ১০:০৮ এএম

এইচএসসি পরীক্ষা: ঝরে পড়েছে ২৩ শতাংশ শিক্ষার্থী


এসএসসি পরীক্ষা

এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। তাদের মধ্যে নিয়মিত শিক্ষার্থী ১১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৬১ জন।


বাকিরা অনিয়মিত ও ফল উন্নয়ন প্রার্থী। অন্যদিকে এবার যে নিয়মিত পরীক্ষার্থী আছে তাদের সঙ্গে ২ বছর আগে একাদশ শ্রেণিতে নিবন্ধন করেছিল ১৪ লাখ ৮৭ হাজার ২৩৯ জন। অর্থাৎ ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬৭৮ জনই ঝরে পড়েছে; যা মোট শিক্ষার্থীর ২৩ শতাংশ।

আর ঝরে পড়াদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ১ লাখ ৭৯ হাজার ১০৮ জন; যা নারী শিক্ষার্থী বিবেচনায় ৫২ শতাংশ। ৬ নভেম্বর এ পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির অধ্যাপক তপন কুমার সরকার যুগান্তরকে বলেন, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাশের পরে অনেকেই ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন ধরনের কারিগরি শিক্ষায় ভর্তি হয়। আবার কেউ কেউ বিদেশে পড়তে চলে যায়। এই দুই সংখ্যাটা কম নয়। সে কারণে এই স্তরে ঠিক কত শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে সেটা সরলভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে মাধ্যমিক পাশের পরে অনেকে কর্মজীবনে প্রবেশ করে এবং মেয়েদের মধ্যে কারও কারও বিয়ে হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে থাকে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী সম্প্রতি যুগান্তরের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতি শুরুর পরপরই সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে ঝরে পড়ার বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। সেটা সত্য বলে প্রমাণিত হচ্ছে। আসলে ঝরে পড়ার প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ জরুরি। সেজন্য বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২০ সালে ৩ লাখ ৭৪ হাজার এবং গত বছর ৩ লাখ ১৮ হাজার শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। সংখ্যাগত দিক থেকে এবার ঝরে পড়ার হার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এবারে যে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে, তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আগে ফেল করা শিক্ষার্থী অনিয়মিত হিসাবে অংশ নিচ্ছে ৫৩ হাজার ৩১৭ জন। প্রাইভেট পরীক্ষার্থী ২৩২৬ জন, আর ফল উন্নয়ন পরীক্ষার্থী ১২০৩ জন।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সংখ্যাগত হিসাবে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থী ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে। ঝরে পড়ার হারও বেশি এই বোর্ডে। ৩ লাখ ২৮ হাজার ৯৩২ জন একাদশ শ্রেণিতে নিবন্ধন করলেও পরীক্ষা দিচ্ছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৭২৯ জন। ঝরে পড়েছে ৬০ হাজার ২০৩ জন। এভাবে রাজশাহী বোর্ডে ঝরে পড়েছে ৩০ হাজার ২৫৯ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৩১ হাজার ৩৯৮ জন, যশোরে ২৫ হাজার ৪৩ জন, চট্টগ্রামে ২২ হাজার ৩৫৬ জন, বরিশালে ১৫ হাজার ৪৩৫ জন, সিলেটে ১৫ হাজার ৯২৬ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ২৫ হাজার ৫৪২ জন, ময়মনসিংহে ১৫ হাজার ৮৯২ জন ঝরে পড়েছে। সাধারণ বোর্ডে নিবন্ধিত হয়েছে ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৬৯৩ জন, আর ঝরে পড়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৫৫ জন। যা মোটের হিসাবে ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ। এছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডে ৬৮ হাজার ৩৪ জন নিবন্ধন করলেও পরীক্ষা দিচ্ছে ৪০ হাজার ৭৪৬ জন, যা প্রায় ২০ শতাংশ।

আর দুর্বল শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়ে থাকে কারিগরি বোর্ডের অধীন এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে। এবারে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীই ঝরে পরেছে এই শাখায়। ২ লাখ ১১ হাজার ৫১৪ জন রেজিস্ট্রেশন করলেও পরীক্ষা দিচ্ছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬৪৯ জন। ছিটকে পড়েছে ৬৯ হাজার ৮৬৫ জন, যা ৩৩ শতাংশ। এরপরই স্থান অপর বিশেষায়িত শিক্ষা মাদ্রাসার। দাখিলে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৮৮৮ জন রেজিস্ট্রেশন করলেও পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯৯৬ জন। বাদ যাচ্ছে ৭৯ হাজার ৮৯২ জন। শতকরা হার ২৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গত বছর এই বোর্ডে ২১ দশমিক ৮২ শতাংশ ঝরে পড়েছিল। ঝরে পড়ায় শীর্ষে আছে যশোর বোর্ড। বোর্ডটিতে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৩৯৭ জন রেজিস্ট্রেশন করলেও অংশ নিচ্ছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৯০ জন। পরীক্ষা দিচ্ছে না ৩৩ হাজার ৪০৭ জন বা ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ। ঝরে পড়ার হারে সাধারণ বোর্ডের মধ্যে দ্বিতীয় কুমিল্লা বোর্ড। ওই বোর্ডে ১৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। এভাবে ঢাকায় ১৩.৩৩ শতাংশ, রাজশাহীতে ১৩.৮২, চট্টগ্রাম বোর্ডে ১২.৩১ শতাংশ, বরিশালে ১৫.১৫, সিলেটে ১৪ শতাংশ, দিনাজপুরে ১৫.৪৮ এবং ময়মনসিংহে ১৩.৩৭ শতাংশ ঝরে পড়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ১ লাখ ৩২ হাজার ৭১৪ জন নিবন্ধন করলেও এখন পরীক্ষা দিচ্ছে ৮৯ হাজার ১৭০ জন। আর কারিগরিতে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩২ জন নিবন্ধন করে পরীক্ষা দিচ্ছ ১ লাখ ১৩ হাজার ৭৫৩ জন। উভয় স্তরে গড়ে ২০ ও ৩২ শতাংশ ঝরে পড়েছে।

এমআই