পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে আপত্তি নেই ইউজিসির
Share on:
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও করোনার প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর জোর দাবি উঠেছে। ইতোমধ্যে পরীক্ষা পেছানোর বিষয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে একটি অলিখিত প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। তবে দেশের বন্যা ও করোনার সার্বিক পরিস্থিতির বিবেচনায় কমিশন জানিয়েছে, পরীক্ষা পেছানো নিয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না তারা। এ বিষয়ে গুচ্ছ কমিটি নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবে।
ভর্তিচ্ছুরা বলছেন, দেশে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সংক্রমের হার ১৬ শতাংশের ঘরে পৌঁছে গেছে। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। এছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বন্যা পরিস্থিতির এখনও উন্নতি হয়নি। অনেকেরই বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া কোনো ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।
তাদের দাবি, যেখানে বেঁচে থাকতে প্রতিদিন লড়াই করতে হচ্ছে সেখানে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে চিন্তা করার মতো অবকাশ তাদের নেই। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে সেটি কেউ জানে না। বন্যার পানি নেমে গেলেও সবকিছু স্বাভাবিক হতে কমপক্ষে এক মাস সময় লাগবে। এই অবস্থায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অন্তত এক মাস পেছানো দরকার।
ভর্তিচ্ছুদের দাবির বিষয়ে ইউজিসি ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেছেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পেছানো নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। এ বিষয়ে ইউজিসি কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। এটি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক করবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে করোনাভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ চলছে। আগামী দুই সপ্তাহ সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটিতে করোনার কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হবে। এই অবস্থায় বড় ধরনের জমায়েতের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। একসঙ্গে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলতে বলা হয়েছে।
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৩০ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা ৩০ জুলাই, মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের ১৩ আগস্ট এবং ব্যবসায়িক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে।
চলতি বছরে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর সাথে তাদের অভিভাবকরাও পরীক্ষা কেন্দ্রে যাবে। ফলে সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির এখনো উন্নতি হয়নি। এই অবস্থায় ওই এলাকার শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা পেছানোর দাবি তুলেছেন।
করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির বিষয়টি ভাবাচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটিকেও। বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ভর্তি পরীক্ষা পেছানো হতে পারে।
জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির সদস্য এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এটি এখন বাড়তেই থাকবে। এই অবস্থায় ৩০ জুলাই থেকে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা কঠিন হয়ে পড়বে। পরীক্ষা পেছানোর বিষয়টি নির্ভর করছে করোনা ও বন্যা পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তার ওপর। পরিস্থিতি খারাপ হলে সবাই মিলে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এমআই