tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
শিক্ষা প্রকাশনার সময়: ১২ জুলাই ২০২৪, ১৮:০০ পিএম

ফের কোটাবিরোধীদের শাহবাগ অবরোধ


image-282308-1720784658

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবি এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে সমাবেশ করছে শিক্ষার্থীরা।


শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান করে।

শাহবাগে শিক্ষার্থীরা ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’ এমন বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

এদিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দুপুরের পর থেকে মধুর ক্যানটিনে জড়ো হচ্ছেন। সেখানে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদেরও আসার কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানায় ছাত্রলীগ।

পুলিশের বাধা ও হামলার মধ্যেই বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত ঢাকার শাহবাগসহ সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে কোথাও কোথাও দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

রাজধানীর শাহবাগে গতকাল রাত নয়টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ হামলা চালিয়েছে।

এই হামলার প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবিতে শুক্রবার বিকেল চারটায় সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হবে। জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে আইন পাস করে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে ৫ শতাংশ কোটা রেখে বাকি কোটা বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।

ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন।

টানা কয়েক দিন আন্দোলনের পর গত ৯ জুলাই কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। পরেরদিন হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ।

এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। তবে শিক্ষার্থীরা আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

এসএম