সংসদে ইসি নিয়োগ আইন পাস হচ্ছে আজ
Share on:
আজ বৃহস্পতিবার ( ২৭ জানুয়ারি) চলমান জাতীয় সংসদের শীতকালীন সংক্ষিপ্ত অধিবেশনের শেষ দিনে বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন পাস হবে বলে জানা গেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের যোগ্যতা-অযোগ্যতার অংশে দু’টি পরিবর্তনের সুপারিশ করে নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের খসড়া সম্পর্কিত প্রতিবেদন জাতীয় সংসদে জমা দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
গতকাল বুধবার ( ২৬ জানুয়ারি) বিলের ওপর প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপন করেন কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার ( ২৭ জানুয়ারি) চলমান জাতীয় সংসদের শীতকালীন সংক্ষিপ্ত অধিবেশনের শেষ দিনে বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন পাস হবে বলে জানা গেছে।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ গত রোববার সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিলটি পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
নিয়ম অনুযায়ী এখন আইনমন্ত্রী বিলটি পাসের জন্য সংসদে প্রস্তাব করবেন। এর ওপর সংসদ সদস্যরা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনীর প্রস্তাব তুলবেন।
তখন বিলটি নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে। সংসদ চাইলে সংসদীয় কমিটির সুপারিশসহ কিংবা সংসদে যে রকম স্থির করা হবে সেভাবে খসড়া আইনটি পাস হবে। সাধারণত সংসদীয় কমিটির সুপারিশ সংসদে গ্রহণ করা হয়।
সংসদে উত্থাপিত বিলে সিইসি ও কমিশনারদের যোগ্যতা সংক্রান্ত ৫(গ) ধারায় বলা আছে, সিইসি ও কমিশনার হতে গেলে, কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
এই ধারায় সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও পেশায়’ শব্দ যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
অর্থাৎ সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে সার্চ কমিটি কাউকে সুপারিশের ক্ষেত্রে এমন কাউকে করতে হবে, কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত পদে বা পেশায় যার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা আছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতঃপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির ও তার দ্বারা সম্পাদিত কার্যাবলি এবং উক্ত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলে গণ্য হবে এবং ওই বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।’
করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসদের চলতি অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করা হচ্ছে। আজ শেষ হচ্ছে এ অধিবেশন। অবশ্য এ দিন সকাল-বিকাল দুই বেলা বৈঠক চলবে।
জাতীয় সংসদের ২০২২ সালের প্রথম অধিবেশন গত ১৬ জানুয়ারি শুরু হয়। সংবিধান অনুযায়ী বছরের প্রথম এ অধিবেশনের প্রথম দিন রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেন।
পরদিন সংসদের বৈঠক চলার পর ৫ দিন বিরতি দিয়ে গত রোববার শুরু হয় অধিবেশন। এরপর আবারো দুই দিনের বিরতি দিয়ে গতকাল বুধবার সংসদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
আজকের বৈঠকের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ অধিবেশন। সবমিলিয়ে চলতি অধিবেশন পাঁচ কার্যদিবস চলছে।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, শুরুতেই চলতি অধিবেশন বেশ কিছু দিন চালানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। কয়েক দফায় মুলতবি করে এ অধিবেশন ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত চালানোর চিন্তা করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
তবে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বিস্তারের কারণে ওই পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।
জানা গেছে, গত কয়েক দিনে ৪০ জনের মতো সংসদ সদস্য এবং সংসদ সচিবালয়ের দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এ বিষয়ে সরকারদলীয় হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, শীতকালীন অধিবেশন আমাদের আরো কয়েকটা দিন চালানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু করোনা বেড়ে যাওয়ায় অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করছি। আমাদের কাছে মানুষের জীবন গুরুত্বপূর্ণ।
এইচএন