চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে ১২ দিনেই ৫ জনের মৃত্যু
Share on:
চট্টগ্রামে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। মশাবাহিত এ রোগে সেপ্টেম্বরের ১২ দিনেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একদিনেই মারা গেছেন দুইজন নারী। একে উদ্বেগজনক বলে মনে করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে আলাদা ওয়ার্ড চালুর নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন। এদিকে মশক নিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) স্বাস্থ্য বিভাগকে চিঠি দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। তবে নগরীতে চসিকের মশক নিধন কার্যক্রম নেই বললেই চলে।
সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামে একদিকে ১২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। একইদিন শাকিলা আক্তার (২৬) ও শান্তা সর্দার (২০) নামে দুই নারীর মৃত্যু হয়। পরদিন বুধবার আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়ায়। বৃহস্পতিবার আক্রান্ত হয় ৩৪ জন। যা আগেরদিনের তুলনায় দ্বিগুন। ওইদিন নয়ন নামে ১৬ বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামে চলতি বছর ৭৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬৬ জন। অথচ আগস্ট মাসে আক্রান্ত ছিলেন ২০২ জন, জুলাইয়ে ১৯৮, জুনে ৪১, মে মাসে ১৭, এপ্রিল মাসে ১৮, মার্চে ২৮, ফেব্র“য়ারিতে ২৫ এবং জানুয়ারিতে ৬৯ জন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা ডেঙ্গু রোগীর আসল চিত্র নয়। কারণ, অনেকে অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকে রোগনির্ণয় কেন্দ্র থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য পেয়ে বাসা-বাড়িতে চিকিৎসা নিয়েও ভাল হয়ে যাচ্ছেন। এ সংখ্যাটা আক্রান্তের মোট তালিকায় নেই।
সূত্র আরও জানায়, চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত ৭৬৪ জনের মধ্যে ৪৩১ জন নগরীর বাসিন্দা এবং ৩৩৩ জন উপজেলার বাসিন্দা রয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ রয়েছেন ৪১৪ জন, মহিলা ১৯৬ জন ও শিশু রয়েছেন ১৫৪ জন। এছাড়া মারা যাওয়া ১০ জনের মধ্যে ২ জন পুরুষ, ৬ জন মহিলা ও ২ জন শিশু রয়েছেন। চট্টগ্রামে গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১৪ হাজার ৮৭ জন। মৃত্যু হয়েছিল ১০৭ জনের।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের (বিআইটিআইডি) অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. মামুনুর রশীদ বলেন, সাধারণত জুন-জুলাই থেকে ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হয়, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়। এবারও জুলাই থেকে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে শুরু করেছে। বৃষ্টি থামার পর মূলত মশার উপদ্রব বাড়ে। এবারও এ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এ নিয়ে আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুদ রয়েছে। মশক নিধনের জন্য সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সরকারি হাসপাতালগুলোতে পৃথক ডেঙ্গু কর্ণার করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
এনএইচ