tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ০৯ জুলাই ২০২৪, ০৯:০০ এএম

টেক্সাসে বেরিলের তাণ্ডবে বিদ্যুৎহীন ২৭ লাখ লোক, বাতিল ১৩০০ ফ্লাইট


1000002815

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে প্রবল শক্তি নিয়ে আঘাত হেনেছে অতি বিপজ্জনক শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় হারিকেন বেরিল। এতে করে সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনাও। এছাড়া বেরিলের তাণ্ডবে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন ২৭ লক্ষাধিক মানুষ। হিউস্টনের বৃহত্তম বিমানবন্দর থেকে বাতিল করা হয়েছে ১৩০০ টিরও বেশি ফ্লাইট।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বেরিল দক্ষিণ-পূর্ব টেক্সাসে আঘাত হেনেছে। প্রচণ্ড বৃষ্টি এবং প্রবল বাতাসের ঝোড়ো হাওয়া নিয়ে আঘাত হানা এই ঝড়ে ২৭ লাখেরও বেশি মানুষের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছন কমপক্ষে দুইজন।

বিবিসি বলছে, স্থানীয় সময় সোমবার সকালে যখন বেরিল প্রথম টেক্সাসে আঘাত হানে, তখন এটি একটি ক্যাটাগরি ওয়ান হারিকেন হিসাবে সেখানে আছড়ে পড়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে ধীরে ধীরে শক্তি কমে এটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়ে পরিণত হয়েছে।

কর্মকর্তারা ধ্বংসাত্মক বাতাস, ১৫ ইঞ্চি (৩৮ সেমি) পর্যন্ত বৃষ্টি এবং ‘জীবনের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী’ ঝড়ের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। এছাড়া হিউস্টনের বৃহত্তম বিমানবন্দরে ১৩০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

অঙ্গরাজ্যটির গভর্নরের কার্যালয় বাসিন্দাদের এই ঝড়কে অবমূল্যায়ন না করার জন্য বারবারই অনুরোধ করেছে। কয়েক দিন আগে এই হ্যারিকেন ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে আঘাত হানে এবং এতে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছিল।

টেক্সাসে সোমবার ৫৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা গেছেন। মূলত বাতাসের ধাক্কায় বিদ্যুতের লাইন ভেঙে পড়ায় এবং হ্যারিস কাউন্টিতে তার বাড়িতে গাছে ভেঙে পড়ে প্রাণ হারান তিনি। গাছ ভেঙে বাড়ির ওপরে পড়ার ফলে তার ছাদ ধসে পড়েছিল।

একই কাউন্টিতে হিউস্টনের কিছু অংশও রয়েছে এবং সেখানে ৭৪ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার বাড়ির ছাদে গাছ ভেঙে পড়ার পরে মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ওই বৃদ্ধার নাতনি পুলিশকে পরে খবর দেন।

সোমবারের এই ঝড়ের পর হিউস্টনের শহরতলিতে পুলিশ ইতোমধ্যেই উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেছে। মার্কিন পূর্বাভাস প্রদানকারী সংস্থা অ্যাকুওয়েদারের মতে, জুলাই মাসে টেক্সাসের এই ধরনের হারিকেনের আঘাত বেশ কিছুটা বিরল।

মূলত হিউস্টন একটি নিচু উপকূলীয় শহর এবং এটি বরাবরই বন্যার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দুর্যোগের সময় হিউস্টন এলাকায় বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৭৫ মাইল বা ১২০ কিলোমটারে পৌঁছেছিল এবং ঝোড়ো বাতাসের গতিসীমা ঘণ্টায় ৮৭ মাইল বা ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছেছিল বলে জানানো হয়েছে।

এছাড়া ঝড়ের সময় মুষলধারে বৃষ্টিপাতের কারণে আকস্মিক বন্যাও দেখা দিয়েছে। মূলত যে সমস্ত এলাকায় মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে, সেসব এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

অবশ্য ঝড়টি এখন শক্তি হারাবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে এটি উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাচ্ছে। তবে বৃষ্টিপাতের জেরে আকস্মিক বন্যার পাশাপাশি ভারী বর্ষণের ঝুঁকি এখনও রয়ে গেছে।

পাওয়ারআউটেজ.ইউএস-এর তথ্য মতে, সোমবার বিকেল পর্যন্ত টেক্সাসের ২৭ লাখেরও বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন। এছাড়া ফ্লাইটঅ্যাওয়ার.কম-এর তথ্য অনুসারে, হিউস্টনের বৃহত্তম বিমানবন্দর বুশ ইন্টারকন্টিনেন্টাল বিমানবন্দরে ১ হাজার ৯৭টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

ঝড়টি হিউস্টন অতিক্রম করার সময় লুইসিয়ানার কয়েকটি কাউন্টিসহ ঝড়ের গতিপথে থাকা টেক্সাসের আরও কয়েক ডজন কাউন্টিতে টর্নেডো সতর্কতাও জারি করা হয়েছিল।

এনএইচ