রাহানের ব্যাটে ফলো-অন এড়াল ভারত
Share on:
অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৪৬৯ রানের জবাবে ফলো-অনের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল ভারত। প্যাট কামিন্স ও স্কট বোলান্ডের তোপে রোহিত-কোহলিরা দাঁড়াতেই পারছিলেন না। ফলে দ্বিতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে মাত্র ১৫১ রান তুলতে পারে ভারত। ফলো-অন এড়াতে তাদের দরকার ছিল আর ১১৯ রান। সেই গর্ত থেকে রোহিতদের উদ্ধার করেছেন অজিঙ্কা রাহানে ও শার্দূল ঠাকুর। দুজনের একশ রানের বেশি জুটিতে অলআউট হওয়ার আগে ভারত করেছে ২৯৬ রান।
তবে ফলো-অন এড়ালেও, অস্ট্রেলিয়া ১৭৩ রানের বড় লিড পেয়েছে। যা তাদেরকে এখনও শিরোপার লড়াইয়ে এগিয়ে রেখেছে অনেকটাই। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার আরও বড় পুঁজি গড়ার পথ তৈরি করেছে এই লিড। অবশ্য আরও আগেই ভারত গুটিয়ে যেতে পারত। দুটি সহজ ক্যাচ এবং নো বলের কারণে নিশ্চিত আউট থেকে বেঁচে গিয়েছেন রাহানেরা। যা তাদের সঙ্গে অজিদের ব্যবধান কমানোর সুযোগ এনে দিয়েছে।
দ্বিতীয় দিন রাহানের সঙ্গে অপরাজিত ছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার শ্রীকর ভারত। তৃতীয় দিন সকালে ক্রিজে এসে প্রথম বলে সিঙ্গেল রান নিয়ে নন-স্ট্রাইকে যান রাহানে। দিনের প্রথম বলের মোকাবিলাতেই বোলান্ডের বলে বোল্ড হয়ে যান ভারত। আগেরদিন অপরাজিত থাকা ৫ রানের সঙ্গে তিনি আর রান যোগ করতে পারেননি। ফলে আগেরদিন দ্রুত উইকেট হারানোর শঙ্কা অবারও চেপে বসে ভারত শিবিরে।
এরপরই পাল্টা আঘাত দেওয়ার লক্ষ্যে জুটি বাঁধেন রাহানে ও শার্দূল ঠাকুর। দুজনের জুটিতে এসেছে ১০৯ রান। তবে ফলো-অন এড়ানোর খানিক আগেই ফিরে যান রাহানে। সেঞ্চুরির পথে থাকা ডানহাতি এই ব্যাটারকে ৮৯ রানে আউট করে দেন কামিন্স। এই রান করতে রাহানে ১২৯ বলে ১১টি চার এবং একটি ছক্কা হাঁকান। অবশ্য অজি স্লিপার ক্যাচ হাতছাড়া না করলে রাহানে-শার্দূলের জুটি আরও আগেই ভাঙতে পারত। রাহানের বিদায়ের পর ১০ রানের ব্যবধানে ফেরেন পেসার উমেশ যাদবও।
এরপর টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরির দেখা পান শার্দূল। তবে এই অর্জনের পর বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি তিনি। শেষদিকে মোহাম্মদ শামি আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করলেও, ২৯৬ রানে গুটিয়ে যায় ভারত।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন অধিনায়ক কামিন্স। এছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক, বোলান্ড ও ক্যামেরন গ্রিন। একমাত্র স্পিনার নাথান লায়ন একটি উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে ৪৬৯ রানে থামিয়ে দেওয়া ভারত প্রথম পাঁচ ওভার কাটিয়ে দেয় নিরাপদেই। এরপরই ৩০ রানে পাঁচ বলের মধ্যে তারা হারায় দুই ওপেনারকে। রোহিত শর্মাকে এলবিডব্লিউ করে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম সাফল্য এনে দেন প্যাট কামিন্স। স্কট বোল্যান্ডের বল ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হন সবশেষ আইপিএলের সর্বোচ্চ স্কোরার শুভমান গিল।
পরবর্তীতে জোড়া ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন চেতেশ্বর পূজারা ও বিরাট কোহলি। কিন্তু এবার কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সাসেক্সের হয়ে তিনটি সেঞ্চুরি করা পূজারাও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১৪ রান করে তিনিও বোল্ড হন ক্যামেরন গ্রিনের বল ছেড়ে দিয়ে। কোহলিও পারেননি তেমন কিছু করে দেখাতে। স্টার্কের বাড়তি বাউন্সে স্লিপে স্মিথের দারুণ ক্যাচে তিনি ফেরেন ১৪ রান করে। তখন ৭১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে ভারত।
এরপর রাহানে ও রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে ভারত। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এক প্রান্ত আগলে রাখেন রাহানে। আরেক প্রান্তে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান করেন জাদেজা। দ্রুতই জমে যায় তাদের জুটি। মনে হচ্ছিল এই জুটিতেই দিন পার করে দেবে ভারত। কিন্তু শেষ দিকে আক্রমণে এসে দারুণ এক ডেলিভারিতে জাদেজাকে ফিরিয়ে ৭১ রানের জুটি ভাঙেন নাথান লায়ন। ভারতীয় বাঁহাতি অলরাউন্ডার ৫১ বলে এক ছক্কা ও সাত চারে করেন ৪৮ রান।
এমআই