tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ১২ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৫৮ এএম

কামারুজ্জামানের মৃত্যুর ৭ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দোয়া মাহফিল


central program

ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, বিশিষ্ট সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, লেখক, গবেষক ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদন্ড কর্যকরের ৭ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দু’আ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশে ইসলামী ছাত্রশিবির।


রাজধানীর এক মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি, বিশিষ্ট আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমীর সেলিম উদ্দিন।

প্রধান অতিথি বলেন, ইসলামে দুটি শব্দ সবচেয়ে বেশি মর্যাদাপূর্ণ। প্রথমটি নবুয়াত দ্বিতীয়টি শাহাদাৎ। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জীবন দিয়েছে তাকে তোমরা মৃত বলোনা। এই মৃত্যুর জন্যই কামারুজ্জামান উজ্জীবিত ছিলেন। যা তার কাজ ও কথার মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। তিনি শেষ সময়ে বলেছিলেন ‘হায় আমার রক্তের বিনিময়েও যদি মহান আল্লাহ তায়ালা আমার প্রিয় মাতৃভূমিকে ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেন, তাহলে আমার রক্তদান স্বার্থক হবে’’।

প্রশ্নবিদ্ধ ট্রাইবুনালে কামারুজ্জামানের বিচারিক হত্যাকান্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, দুটি অভিযোগে কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। আপীলের পর ৪ নাম্বার অভিযোগ থেকে তিনি খালাস পেয়েছিলেন। ৩য় অভিযোগের সোহাগপল্লির ঘটনায় একজন সাক্ষীও বলেনি যে, স্বাধীনতার আগে বা ঘটনার সময় তিনি ঐ এলাকায় গিয়েছেন বা কেউ তাকে সে এলাকায় দেখেছে। কামারুজ্জামানও বিচারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন যে, তিনি কখনো সোহাগপল্লিতে যাননি। একজন বিচারপতি রায়ের পর্যালোচনায় বলেছেন, কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সাথে কামারুজ্জামানের কোন সম্পর্ক নেই। এর থেকেই প্রমাণিত হয় কামারুজ্জামান সাহেব বিচারিক হত্যাকান্ডের শিকার।

তিনি আরো বলেন, কুটনৈতিক অঙ্গনে তার সফল পদচারণা জামায়াতের অবস্থানকে শক্ত করেছেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র দূতদের সাথে তিনি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। তার গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন রাষ্ট্রদূত নিয়মিত তার খোঁজখবর নিতেন। একাধিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানও কামারুজ্জামান সম্পর্কে উদ্বিগ্ন ছিলেন। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর না করার জন্য অনুরোধ এসেছিলো। সুতরাং কামারুজ্জামান কুটনৈতিক অঙ্গনে একজন পরিচিত ও সফল ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

তিনি বলেন, ছাত্রশিবির সম্পর্কে কামারুজ্জামানের শেষ কথা ছিলো, কুরআনের চর্চা বাড়াতে হবে, বিশেষ করে তাফহিমুল কুরআন। এ আন্দোলনের কর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে ময়দানে থাকতে হবে। আল্লাহর পছন্দের ব্যক্তির তালিকায় নিজেকে শামিল করার চেষ্টা করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, কামারুজ্জামান একটি নাম একটি ইতিহাস। বাংলাদেশের রাজনৈতিক, গণমাধ্যম, গণতন্ত্র ও কুটনৈতিক ময়দানসহ সর্বক্ষেত্রে তিনি একজন আলোচিত ব্যক্তি ছিলেন। তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমন করেছেন। তিনি ইসলামী আন্দোলন কেন্দ্রীক একাধিক বই রচনা করেছেন। যা পাঠক মহলে সমাদৃত হয়েছে। তিনি তার এলাকাতেও ব্যপক জনপ্রিয় ছিলেন যা বিভিন্ন নির্বাচনে ভোটের হিসেবে প্রমাণ হয়েছে। আজ আমাদের প্রিয় নেতা নেই কিন্তু তার অসমাপ্ত রয়ে গেছে। আমরা তার অসামপ্ত কাজ সমাপ্ত করেই শহীদের রক্তের বদলা নিবো ইনশাআল্লাহ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সেলিম উদ্দিন বলেন, কামারুজ্জামান গণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সামনের সারির একজন নেতা ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি সাংবাদিক হিসেবে তিনি প্রখর মেধাবী মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তার জ্ঞানগর্ভ লেখনি ও প্রবন্ধ রয়েছে। তিনি একজন সুসংগঠক ছিলেন। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে কঠিন পরিস্থিতিতে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তিনি সংগঠনকে উজ্জীবিত রেখেছেন। একটি মুহুর্তের জন্য তিনি মাথা নত করেননি ও মনোবলও হারাননি। শহীদ কামারুজ্জামানের রেখে যাওয়া এ পথকে আরো শাণিত করতে, মানবতার কল্যাণের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে ময়দানে কাজ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বলেন, শহীদি ঈদগাহ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রথম ও দ্বিতীয় কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদাৎ বরণ করেছেন। কামারুজ্জামান আমাদের কাছে প্রেরণার উৎস। দেশ, ইসলাম, তাহযিব-তামাদ্দুন রক্ষায় শহীদ কামারুজ্জামান হাসতে হাসতে শাহাদাতকে বরণ করেছেন। সেই চেতনা ধারণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ। আগামীতে আমাদের যতই প্রতিকূলতা আসুক না কেন ছাত্রশিবির যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে ইনশাআল্লাহ। (বিজ্ঞপ্তি)

এইচএন