tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ২১ জুন ২০২৪, ০৮:৫৯ এএম

আজ ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী


image_97769_1718937504

কদিন আগেই ভারত সফর করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সে দেশে গিয়েছিলেন তিনি। ১১ দিনের মাথায় আজ শুক্রবার ফের ভারতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। দুদিনের এই রাষ্ট্রীয় সফর পূর্বনির্ধারিত। আনুষ্ঠানিক এই সফর ঘিরে তাই চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মেলাবে বাংলাদেশ ও ভারত। নিকটতম প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সুসম্পর্ক চলমান থাকায় এবারের সফর থেকে ইতিবাচক প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে বলে মত কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের।


নির্ধারিত সফরসূচি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা হবেন।

দুই সপ্তাহের কম ব্যবধানে ভারতের রাজধানীতে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর এটি। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জোট এই মেয়াদে সরকার গঠনের পর কোনো সরকারপ্রধানের এটিই প্রথম দ্বিপক্ষীয় আনুষ্ঠানিক সফর। এ সময় উভয় প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ে একান্ত বৈঠক ছাড়াও প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা হবে। উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদারে বেশকিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে। সেইসঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূচি অনুযায়ী, আজ সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। আগামীকাল শনিবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সরকারি বাসভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হবে। শেখ হাসিনা একই দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। পরে বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখার ও সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ফের সাক্ষাৎ করে দেশে ফিরবেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গত তিন মেয়াদে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানাভাবে উপকৃত হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের সফল কূটনৈতিক তৎপরতায় ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত স্থলসীমানা ও সমুদ্রসীমা শান্তিপূর্ণভাবে নির্ধারিত হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ ভারত বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। দুদেশের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংযোগ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে নিবিড় ভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক সৃষ্টি করে দেশের অনেক ক্ষতি করেছে। তারা সংশয়-অবিশ্বাসের দেয়াল সৃষ্টি করেছিলেন, তা ভেঙেছেন শেখ হাসিনা। ভারতের সঙ্গে সব সমস্যা আলোচনার টেবিলে সমাধান করব। বন্ধুত্বপূর্ণ, ভারসাম্যপূর্ণ ও সম্মানজনক সম্পর্ক চাই। জাতীয় স্বার্থ বিকিয়ে কারও সঙ্গে সস্পর্ক করবে না সরকার। ছিটমহল ও সীমান্ত সমস্যার মতো অনেক সমস্যার সমাধান কিন্তু অতীতে হয়েছে।’

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, অনেক প্রাপ্তির সম্ভাবনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরেও তিস্তার পানি নিয়ে কোনো অগ্রগতির সম্ভাবনা নেই। তবে বেশ কয়েকটি জায়গায় বাংলাদেশের প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্টের (সেপা) অনুমোদন আসতে পারে। এই চুক্তি সম্পন্ন হলে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য, শুল্ক কাঠামো ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে। এনার্জি নিয়ে এই সফরে আলোচনা হতে পারে। নেপাল থেকে ভারতের মধ্য দিয়ে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি সুরাহা হলে সেটি বাংলাদেশের জন্য উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি হবে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. হুমায়ুন কবির কালবেলাকে বলেন, ‘বেশ কয়েকটি জায়গায় বাংলাদেশের প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে। সেপা চুক্তি হলে সামগ্রিকভাবে আমাদের আমদানি, রপ্তানি, শুল্ক, বিনিয়োগ এসব বিষয়ে লাভবান হব। এনার্জি নিয়ে এই সফরে আলোচনা হতে পারে। তিস্তা সমস্যা নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী না হলেও এ ব্যাপারে ইতিবাচক আলোচনা হতে পারে। যদি মোদি সরকার এখানে যথেষ্ট পরিমাণ রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখাতে পারে, তাহলে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। প্রত্যাশা থাকবে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড যাতে বন্ধ হয়, সে ব্যাপারে তারা কমিটমেন্ট করবে।’

এনএইচ