গণগ্রেফতার, রিমান্ড-নির্যাতন ও হতাহতের ঘটনায় সিনিয়র সাংবাদিকদের উদ্বেগ
Share on:
সাধারণ ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গণহত্যা, ব্লক রেইড, গণগ্রেফতার, রিমান্ডে অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের সিনিয়র সাংবাদিকরা।
২৯ জুলাই (সোমবার) এক যুক্ত বিবৃতিতে সিনিয়র নেতারা বলেন, সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব সাধারণ ছাত্র-জনতার ওপর যেভাবে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে লেলিয়ে দিয়েছে তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। উপরের নির্দেশ পেয়ে সরকার দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী এবং পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি যৌথভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে শত শত ছাত্রজনতা নিহত হয়। যার একটি অংশ দেশী বিদেশী গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দেয়ায় বড় অংশই এখনো অপ্রকাশিত।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এপর্যন্ত ২৬৬ জন শহীদের নাম তালিকা প্রকাশ করা হলেও এ সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৩৬ জনকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। এ ছাড়া ঐ হামলায় ৪ জন সাংবাদিক নিহত ও দুই শতাধিক সাংবাদিক আহত হয়েছেন। হতহতরা বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ। হতাহতের উল্লেখিত সংখ্যা উল্লেখ করে গণমাধ্যমগুলো বলছে এ সংখ্যা মাত্র কয়েকটি হাসপাতাল থেকে পাওয়া। এর বাইরে আরো অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে, যেখানে হতাহতের অনেক ঘটনা আছে। আবার অনেকে পরিস্থিতির কারণে লাশ হাসপাতালে না এনে নিজেরাই বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী চিকিৎসাধীন আছেন ৬ হাজার ৭ শত ১ জন ( সূত্র প্রথম আলো)। যাদের অনেকেই চিরতরে অন্ধ হয়ে গেছেন এবং অনেকে হয়েছেন পঙ্গু। এমতাবস্থায় আন্দোলন দমনের জন্য শাসকদের নির্দেশে সাধারণ ছাত্র ও আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যে ভাবে গণগ্রেফতার চালানো হচ্ছে, সেটা রীতিমতো দেশের সংবিধান বিরোধী ও মানবাধিকারের চরম লংঘন।
এটা দিবালোকের মতো সত্য যে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘটিত সহিংসতায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা- কর্মীরাও জড়িত ছিলেন। কিন্তু বেছে বেছে গ্রেফতার করা হচ্ছে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের। আবার যারা ঘটনার সাথে জড়িত নন, তাদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। থানা গুলোতে মামলায় কে কত কত বেশি আসামি দেখাবেন তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী প্রথমে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে মামলা করে। পরে সন্দেহভাজন হিসেবে যাদের ধরা হয়, তাদের নাম আসামি হিসাবে দেখানো হচ্ছে।
আমরা অবিলম্বে সরকারকে অমানবিক ও বেআইনি কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকা এবং হত্যাকান্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আহবান জানাচ্ছি। সংবিধান নাগরিকদের যে মৌলিক অধিকার দিয়েছে তা লংঘন না করার আহবান জানাচ্ছি।আমরা মনে করি চলমান সমস্যার যৌক্তিক সমাধান না হলে দেশের পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে। যা আমাদের কারো কাম্য নয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সিনিয়র সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন, আলমগীর মহিউদ্দিন,আবুল আসাদ,এরশাদ মজুমদার,কবি আল- মুজাহিদী, মোকাররম হোসেন, মোস্তফা কামাল মজুমদার, সালাহউদ্দিন বাবর,রুহুল আমিন গাজী,কবি আবদুল হাই শিকদার, এম এ আজিজ , এলাহী নেওয়াজ খান,মুন্সি আবদুল মান্নান,কামাল উদ্দিন সবুজ, মোবায়দুর রহমান, ড. মাহবুব হাসান, কাদের গনি চৌধুরী,মোঃ শহিদুল ইসলাম, খুরশীদ আলম, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বাকের হোসাইন, ইলিয়াস খান , আব্দুল আউয়াল ঠাকুর,আবুল কালাম মানিক,আমিরুল ইসলাম কাগজী, সরদার ফরিদ আহমেদ, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, বখতিয়ার রানা,মাসুমুর রহমান খলিলি, মমতাজ বিলকিস বানু,ওবায়দুর রহমান শাহীন,খায়রুল বাশার,একে এম মহসিন, সৈয়দ মেজবাহ, কবি মাহমুদ শফিক, মমতাজ বিলকিস বানু, রোজী ফেরদৌস, কাজী রওনাক হোসেন, ইলিয়াস হোসেন, শফিউল আলম দোলন,বদিউল আলম, বখতিয়ার রানা, গোলাম মোস্তফা,জাহেদ চৌধুরী, কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ, শাহ আহমদ রেজা, মাসুদ মজুমদার, আজম মীর, রেজাউর রহমান সোহাগ, নুরুদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান ভূইয়া, কবি আনোয়ারুল কবির বুলু, আতাহার খান, শামসুদ্দিন হারুন, আনোয়ার আলদীন, কায়কোবাদ মিলন, মাহফুজুর রহমান, শাহাদাত হোসেন খান, এস এস জাহাঙ্গীর, সৈয়দ আলী আসফার, মো. শহীদুজ্জামান, খন্দকার হাসনাত করিম, নির্মল চক্রবর্তী, কামার ফরিদ, শামসুদ্দিন আহমেদ, আবু সাঈদ জুবেরী, আবু রূশদ, শিরিন সুলতানা, লিসা ইসলাম, রফিক মোহাম্মদ,শামসুল হক দুররানি, কবি হাসান হাফিজ, কবি মুস্তাহিদ ফারুকী' মোদাব্বের হোসেন, সদরুল হাসান, জাহিদুল করিম কচি, শামসুল হক হায়দরী, মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, সালেহ নোমান, মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল, ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন, মোঃ আনিসুজ্জামান, আবুল হাসান হিমালয়, আকরামুজ্জামান, এসএম ফরহাদ, মীর্জা সেলিম রেজা, গনেশ দাশ, এসএম আবু সাঈদ, জিএম আশিক উল্লাহ, মস্তোফা সরওয়ার, মো. আবদুল জলিল ভূইয়া, জিএম মঈনুদ্দিন হিরু, মাহফিজুল ইসলাম রিপন, আবদুর রাজ্জাক বাচ্চু, শামিম উল হাসান অপু, এম আইয়ুব আলী, সাইফুল ইসলাম, এইচ এম দেলোয়ার, মো হেদায়েত উল্লাহ, মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, খালেদ আহমদ, সিদ্দিক আল মামুন, মিজানুর রহমান, আজাদ আলাউদ্দিন, মো হাফিজুর রহমান হিরা, সালেকুজ্জামান সালেক, সরকার মাজহারুল মান্নান, আবু সাউদ মাসুদ, একেএম মাহফুজুর রহমান, কাজী বিপ্লব হাসান, মোঃ রুবেল প্রমুখ।