tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ১৪ মে ২০২৩, ১৫:৫১ পিএম

এরদোগানের সামনে কঠিন বাধা


6

রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে তুরস্কের সব নির্বাচনে চমক দেখিয়েছেন। আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের পর সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা মনে করা হয় এরদোগানকে।


রোববার(১৪ মে) দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে এরদোগানের সামনে কঠিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগলু।

কিন্তু তুরস্ককে কঠোর হাতে শাসন করা এরদোগান সহজে পরাজয় মেনে নিয়ে নীরবে প্রস্থান করবেন, এমন কথা বিশ্বাস করা কঠিন। রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।

তুরস্কের নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যে অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ ছড়িয়েছে। নির্বাচনের ফল ঘিরে উত্তেজনা থেকে ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশটিতে সংঘাত রাজপথে ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সাড়ে আট কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে নতুন প্রজন্মের ভোটারসহ তুরস্কবাসী পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছেন।

দেশটির জনগণ ব্যাপক মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার দরপতন ও জীবনযাত্রার মান কমে যাওয়া নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন।

এর মধ্যেই গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া লাখো মানুষ গৃহহীন হয়েছেন।

দেশটিতে নির্বাচনের আগে করা জনমত জরিপে এরদোগানের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন কিলিচদারোগলু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এরদোগান তার চমক দেখাতে পারেন। আনাতোলিয়া অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে তার ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। এ সমর্থনের কারণে চিত্র বদলে যেতে পারে।

যারা গত তিন দশকে এরদোগানের উত্থান দেখেছেন, তাদের যুক্তি হচ্ছে— ক্ষমতায় থাকতে এরদোগান সর্বশক্তি দিয়ে লড়বেন। জয় ছিনিয়ে আনতে বা পরাজয় ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যবহার থেকে শুরু করে যে কোনো সুবিধা নিতে দ্বিধা করবেন না তিনি।

কলাম লেখক কাদরি গারসেল বলেন, ‘ফল যদি এরদোগানের পক্ষে না যায় বা ব্যবধান খুব কম হয়, তবে তিনি তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করবেন।

তবে প্রতিদ্বন্দ্বী যদি ভূমিধস জয় পান, সে ক্ষেত্রে তিনি বিশেষ কিছু করতে পারবেন না। এরদোগান তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় রয়েছেন।’

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে কোনো প্রার্থীকে মোট ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি পেতে হয়। সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, তরুণ ভোটারদের কাছে দুই প্রার্থীর আবেদন রয়েছে।

এ কারণে প্রধান বিরোধী জোটের সমর্থকরা আশঙ্কা করছেন, কিলিচদারোগলুর ভোট ভাগ হয়ে গেলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফার ভোটাভুটিতে গড়াতে পারে।

কোনো প্রার্থী ভোটারদের ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দুই সপ্তাহ পর দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে কেউ যদি অর্ধেকের বেশি ভোট পান, তাহলে তিনিই সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।

এরদোগান গত কয়েক দশকে ক্ষমতা একদিকে যেমন পোক্ত করেছেন, তেমনি ভিন্নমত কঠোরভাবে দমন করেছেন। সমালোচক, বিরোধী গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করেছেন তিনি। বিচার বিভাগ এবং অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। গত দুই বছরে তিনজন গভর্নরকে বরখাস্ত করেছেন।

২০১৬ সালে এরদোগানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানচেষ্টার পর তিনি শক্তিশালী জেনারেলদের কোণঠাসা করেছেন। সেনাবাহিনীকে অকার্যকর করে রেখেছেন। তার বিরুদ্ধে চলা সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় এনেছেন।

এরদোগান ও তার দল একে পার্টি (একেপি) তুরস্ককে আতাতুর্কের ধর্মনিরপেক্ষ দেশের অবস্থান থেকে ইসলামপন্থি দেশ হিসেবে তুলে ধরেছে। বিরোধীরা তাকে সুলতান হিসেবে মন্তব্য করেন।

এবি