‘ভালো খাবার’ খুঁজতে হয়রান ঢাবির দুই হলের শিক্ষার্থীরা!
Share on:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও স্যার এ এফ রহমান হলের খাবারের মান উন্নত হচ্ছেই না। ফলে শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।
আশপাশে ভালো কোনো হল ক্যান্টিন না থাকায় প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে জিয়া হলে এসে দুই বেলা খাবার খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
গত বুধবার (১৩ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা জানা যায়। উভয় হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ খাবারের মান নিয়ে। বারবার ক্যান্টিন মালিক ও বাবুর্চি পরিবর্তন করার পরও খাবারের মান বাড়ছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই তাদের।
কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী এই দুই হলের নিজস্ব ক্যান্টিনের মানহীন খাবার খেলেও বেশির ভাগ শিক্ষার্থী কষ্ট করে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে হলপাড়ার হলগুলোর ক্যান্টিনে গিয়ে খাবার খাচ্ছেন। অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরা যেখানে হাত বাড়ালেই পাচ্ছেন কিছুটা ভালো মানের খাবার, সেখানে এই ‘কিছুটা ভালো’ মানের খাবার পেতেই এফ রহমান হল এবং সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থীদের হাঁটতে হচ্ছে প্রায় এক কিলোমিটার পথ।
সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের বাংলা বিভাগের আবাসিক শিক্ষার্থী সাইমুন মাহমুদ বলেন, সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী হল হলেও খাবারের মান বারবার আমাদের হতাশ করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই বেশ কয়েকবার হলে ক্যান্টিন মালিকদের পরিবর্তন করা হলেও খাবারের মানের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। এছাড়া অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার প্রক্রিয়াজাত করা হয়। ফলে আমাদের অনেক পথ পাড়ি দিয়ে খেতে যেতে হচ্ছে।
স্যার এ এফ রহমান হলের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী বোরহান মাহমুদ বলেন, নিজ হল ফেলে অন্য হলে গিয়ে খাবার খেতে কেউ চায় না। বাধ্য হয়েই হলপাড়ায় গিয়ে খাবার খেতে হয়। এফ রহমান হলের খাবারের মানের বর্তমান অবস্থা স্থির নয়। মাঝেমধ্যে মনিটরিং করলে খাবারের একটু মান বাড়ে, কিন্তু পরদিন আবার এমন অবস্থা হয় যে, তা আর মুখে নেওয়ার মতো না। বিশেষ করে, এত মোটা চালের ভাত হয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আর কোনো হলে বিক্রি করে না। কর্মচারীদের অপরিচ্ছন্নতা খুবই কষ্ট লাগে। অনেকের খাবারে তারা হাত দেয়, এগুলো দেখতে খুবই অসুন্দর দেখায়। খোলা তেলের ব্যবহার অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তবু হলপাড়ায় যেতে মন না চাইলে এখানে খাবার খাই।
এ বিষয়ে তার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট কাজী মাহফুজুল হক বলেন, আমরা তাদের অবজার্ভ করছি। খাবার-দাবারের মান দেখার চেষ্টা করছি। আর কিছুদিন গেলে আমরা প্রয়োজনে তাদের চেঞ্জ করে দেব।
তিনি আরও বলেন, ক্যান্টিনে আমি খোলা তেল ব্যবহারের ব্যাপারে যথেষ্ট কঠোরতা অবলম্বনের চেষ্টা করেছি। এখন এটা বন্ধ হয়েছে। খাবারের মান আশা করি উন্নত হবে। আর না হলে আমরা কিছুদিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ম্যানেজার এবং বাবুর্চি চেঞ্জ করব।
তবে এ বিষয়ে সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ফারুক শাহের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি।
এনএইচ