tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
মতামত প্রকাশনার সময়: ০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ২০:৫৬ পিএম

বীমা নিষ্পত্তি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য সময়োপযোগী করা প্রয়োজন


3

কাজী মাহমুদর রহমান : বাংলাদেশে ২০শে ফেব্রয়ারি, ২০২২ তারিখ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যাক্তিদের জন্য বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বীমা প্রকল্প চালু হয়। এটা একটা মহতী পদক্ষেপ। এই বীমা প্রকল্পের ১২ নং ধারা, বীমার টাকা পরিশোধের প্রক্রিয়া, নিয়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যাক্তিদের স্বার্থরক্ষায় কিছু কথা বলা প্রয়োজন।


বীমা প্রকল্পের ১২ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, বীমা দাবি নিষ্পত্তির জন্য নির্ধারিত আবেদন ফর্মে অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সাধারন বীমা কর্পোরেশন বরাবর বীমা দাবির আবেদন দাখিল করতে হবে। এর ফলে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরী হবে তা হলোঃ-

১) বীমাকৃত ব্যক্তি হাসপাতালের সকল দেনা-পাওনা পরিশোধ করার পর বীমা কোম্পানির কাছে দাবি নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করবে। এতে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তির হাতে যথেষ্ট অর্থ থাকার ব্যাপার রয়েছে। অভিভাবকরা প্রতিনিয়ত এ সকল ব্যক্তিদের জন্য অর্থ ব্যয় করে তাদের হাতে কতইবা অর্থ থাকবে যে হাসপাতালের ব্যয় প্রথমে পরিশোধ করবে। এই বীমা প্রকল্প করা হয়েছে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তার জন্য। অথচ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি নিজ থেকে ব্যয় করার পর বীমার দাবি নিষ্পত্তির জন্য বীমা কোম্পানির দ্বারে দ্বারে ঘুরবে এটি কাম্য নয়।

২) বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি বীমা কোম্পানির দ্বারে দ্বারে ঘুরতে যে পরিমাণ যাতায়াত খরচ হবে তা বহন করা তার পক্ষে বা পরিবারের জন্য চাপ মূলক হবে।

৩) বাংলাদেশের যে চিত্র তাতে নিজ থেকে টাকা ব্যয় করে তা বীমা কোম্পানির কাছ থেকে আদায় করা একটা মহা যন্ত্রণাময় কাজ। এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে সুস্থ ব্যক্তি অসুস্থ হয়। সেখানে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি যে আরও অসুস্থ হবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে?

৪) বীমা দাবি পরিশোধের জন্য বীমা কোম্পানিগুলো যে পরিমান প্রক্রিয়াগত কালক্ষেপণ করে তার ক্ষতিকর প্রভাব বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তির উপর পড়বে নিশ্চিত।

৫) অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় নানা ধরনের অযুহাতে বীমা কোম্পানিগুলো বীমা দাবির আংশিক পরিশোধ করে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে বীমা প্রক্রিয়ায় নানা বিবিধ নিয়ম কানুন কারও পক্ষে জানা বা মানা সম্ভব নয়। বীমা কোম্পানিগুলো এসবের সুযোগ নিয়ে সাধারণ জনগণকে বীমা দাবি পরিশোধে প্রতারণা করার অভিযোগ অনেকের কাছ থেকে শোনা যায়। আইনে কোথাও বলা হয়নি যে, ত্রুটি বিচ্যুতি যাহাই থাকুক না কেন, চিকিৎসা নেয়া সাপেক্ষে দাবিকৃত বীমা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।

আধুনিক চিকিৎসা বীমা ব্যবস্থাপনায়, বীমাকৃত ব্যক্তি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয়ার সময় বীমা কোম্পানিকে ফোন বা ইমেইল করে জানিয়ে দেয়। পাশাপাশি চিকিৎসা কেন্দ্রও বীমা কোম্পানি বীমাকৃত ব্যক্তির বীমা নম্বর ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে বীমা কোম্পানিকে অবহিত করে। এরপর নির্ধারিত কাগজে সাইন করে বীমাকৃত ব্যক্তি হাসপাতাল পরিত্যাগ করে। বীমা কোম্পানি সরাসরি সেবা প্রদানকারী হাসপাতালকে চিকিৎসা ব্যয়ভার প্রদান করে।

অতএব এই ব্যাপারে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নিউরো–ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট, সমাজ কল্যাণসহ সংশ্লিষ্ট সকলের উচিৎ বীমা দাবি নিষ্পত্তির ধারাসমুহ অতিদ্রুত সংশোধন ও সময়োপযোগী করা। বীমা নি্ষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি বা তার পরিবারকে জড়িত না করা ও চিকিৎসা নেয়া সহজতর করা।

লেখক : শিশুদের বিশেষ শিক্ষক ও প্রশিক্ষক, সাইকোথেরাপিস্ট, বিহ্যাভিয়ার থেরাপিস্ট।

ফোন : ০১৯১৪০০৯৯৪৭

এন