দিল্লিতে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত
Share on:
অবশেষে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ৩১ বছর বয়সী এক ব্যক্তির দেহে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে। তবে সম্প্রতি তিনি ভারতের বাইরে অন্য কোনো দেশে ভ্রমণ করেননি বলে বেশ কিছু সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দেশটিতে এ নিয়ে চারজনের দেহে এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়লো। এর আগে কেরালায় তিনটি কেস শনাক্ত হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ওই ব্যক্তি হিমাচল প্রদেশের মানালিতে একটি পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন।
তিনদিন আগে পশ্চিম দিল্লির ওই ব্যক্তির দেহে কিছু লক্ষণ দেখা দেওয়ায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
গতকাল (২৩ জুলাই) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে নমুনা পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তার মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিশ্বজুড়ে ৭৫টি দেশে ১৬ হাজারের বেশি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্বব্যাপী জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। শনিবার (২৩ জুলাই) ডব্লিউএইচও ঘোষণা দিয়েছে, বিশ্বব্যাপী মাঙ্কিপক্সের বিস্তার আন্তর্জাতিক উদ্বেগের পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতার পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সারা বিশ্বের সরকারগুলো ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে কঠোরভাবে চেষ্টা চালালেও ভাইরাসটি আরও ছড়িয়ে পড়ার ‘সুস্পষ্ট ঝুঁকি’ রয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্থাটির পক্ষ থেকে এটিই সর্বোচ্চ সতর্কতার মাত্রা। ২০০৭ সালে চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইবোলা, জিকা, কোভিড-১৯, পোলিওসহ মাত্র ছয়টি রোগের প্রাদুর্ভাবের জন্য এই সতর্কতা জারি করেছে তারা।
প্রসঙ্গত, নাক, মুখ, চোখের পাশাপাশি আক্রান্তের পোশাক থেকেও সংক্রমিত হতে পারে এই ভাইরাস। এই ভাইরাসটি খুবই সংক্রামক বলে সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এক বিশেষ ধরনের বসন্ত। জলবসন্ত বা গুটিবসন্তের প্রতিকার থাকলেও এই ভাইরাস এতই বিরল যে, এখনো পর্যন্ত এর নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসাপদ্ধতি জানতে পারেননি চিকিৎসকরা। মূলত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার কিছু দেশে এই ভাইরাসের খোঁজ মেলে। তবে নাম ‘মাঙ্কিপক্স’ হলেও একাধিক বন্যপ্রাণির মাধ্যমে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস। এটি সবচেয়ে বেশি ছড়ায় ইঁদুরের মাধ্যমে।
এই ভাইরাসের উপসর্গ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের শরীরে প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা, পিঠ ও গায়ে ব্যথার মতো লক্ষণ থাকে। এ থেকে হতে পারে কাঁপুনি ও ক্লান্তি। এর পাশাপাশি দেহের বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠে। সঙ্গে ছোট ছোট ক্ষতচিহ্ন দেখা দিতে থাকে মুখে। ধীরে ধীরে তা পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আক্রান্ত ব্যক্তির আশেপাশে থাকা ব্যক্তির মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস। শ্বাসনালি, ক্ষতস্থান, নাক, মুখ কিংবা চোখের মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। এমনকি আক্রান্তের ব্যবহার করা পোশাক থেকেও ছড়ায় সংক্রমণ।
এইচএন