বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কী মত দিলেন ট্রাম্প-কমলা?
Share on:
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম মুখোমুখি টেলিভিশন বিতর্কে মুখোমুখি হন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস।
যেখানে উঠে আসে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ, ক্যাপিটাল হিলের দাঙ্গা, যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের গর্ভপাতের অধিকার, ইসরাইল নিয়ে মার্কিন নীতি এবং চলমান গাজা যুদ্ধসহ বেশ কিছু বিতর্কিত বিষয়।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণা থেকে বিতর্ক, সব জায়গায় ঘুরে ফিরে আসছে বিবদমান ইস্যুগুলো। কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্টের সম্মতির উপর নির্ভর করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তাই জয়ী হলে নীতি এবং সিদ্ধান্ত কে কোনটি গ্রহণ করবে তা জানতে চান ভোটাররা। আর এতে জড়িয়ে আছে বৈশ্বিক বিষয়ও।
অর্থনীতি, ধনী-গরিব প্রসঙ্গ
বিতর্কে কমলা হ্যারিস বললেন, ‘আপনাদের জন্য ট্রাম্পের কোনো পরিকল্পনা নেই। ট্রাম্প শুধু ধনীদের জন্য কর ছাড় দেয়া নিয়ে চিন্তিত। তিনি সুবিধাবাদী অর্থনীতির পক্ষে।’
ট্রাম্পের জবাব, ‘হ্যারিস হলেন খালি কলসি, যার ঢক্কানিনাদ বেশি। হ্যারিসের কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি বাইডেনের পরিকল্পনা টুকে পরিবেশন করছেন।’
কমলার অভিযোগ, ‘ট্রাম্প চীন ও অন্য দেশ থেকে আসা জিনিসের উপর মাসুল বাড়াতে চান। এটা আসলে অ্যামেরিকানদের উপর বিক্রয় কর বসানো। এর ফলে জিনিসের দাম বেড়ে যাবে।’ প্রতি মাসে সাধারণ মানুষের উপর কতটা বোঝা চাপবে সেটাও জানিয়েছেন তিনি।
ইসরাইল-ফিলিস্তিন নিয়ে
ট্রাম্প ও কমলা দুজনের কাছ থেকেই জানতে চাওয়া হয়, তারা কী করে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ থামাবেন?
কমলা তার আগের অবস্থানের কথা আবার জানিয়ে বলেন, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। গতবছর ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে ঢুকে এক হাজার দুইশ মানুষকে হত্যা করে। প্রতিশোধ নিতে এরইমধ্য কমপক্ষে ৪১ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল।
কমলা বলেন, ‘এখন যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। গাজায় সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। সেই সঙ্গে যাদের পণবন্দি করে রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে’।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথেই যেতে হবে। এর ফলে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।’
এ নিয়ে ট্রাম্পের দাবি, ‘তিনি প্রেসিডেন্ট থালে এই সংঘাত হতোই না’। তার অভিযোগ, হ্যারিস ইসরাইলকে ঘৃণা করেন। তিনি প্রেসিডেন্ট হলে দুই বছরের মধ্যে ইসরাইল বলে কোনো দেশ থাকবে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
ট্রাম্প দাবি করেন, ‘আমি এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চাই। আমি মানুষের জীবন বাঁচাতে চাই। বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন হতে দিয়েছে।’
আপনি কি চান, ইউক্রেন যুদ্ধে জিতুক? ট্রাম্প এই প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে যান।
হ্যারিসের অভিযোগ, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে তিনি পুতিনকে ইউক্রেন দখল করে নিতে দেবেন। হ্যারিস বলেন, ‘ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে পুতিন এতক্ষণে কিয়েভে বসে থাকতেন। তার নজর থাকত বাকি ইউরোপের দিকে।’ হ্যারিস বলেন, ‘ইউরোপীয় নেতারাও চান না, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হোন।’
ক্যাপিটাল হিল নিয়ে
ট্রাম্প বলেন, ‘ক্যাপিটলের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমাকে ওরা একটা ভাষণ দিতে বলেছিল, এইটুকুই।’
কমলা বলেন, ‘পাতা উল্টে দেখুন। ওইদিন কী বিশৃঙ্খলা হয়েছিল সেটা দেখুন।’
গর্ভপাত নিয়ে
ট্রাম্পকে গর্ভপাত নিয়ে তার মতামত জানতে চাওয়া হয়। ট্রাম্প বলেন, ডেমোক্র্যাটরা চায় গর্ভধারণের নয় মাস পরেও গর্ভপাত করার অধিকার দিতে।
তিনি চান, গর্ভপাতের বিষয়টি রাজ্যগুলো ঠিক করুক। তারা আইন করুক। ধর্ষণ বা কিছু ক্ষেত্রে তিনি গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে।
কমলা বলেন, ট্রাম্পের আমলে যে তিনজন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ করা হয়, তারাই দুই বছর আগে গর্ভপাত নিয়ে কেন্দ্রীয় স্তরে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার বাতিল করেছেন। তিনি আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ট্রাম্পের গর্ভপাত নিয়ে নিষেধাজ্ঞায় ধর্ষিতাদের ক্ষেত্রেও কোনো ছাড় দেয়া হয়নি।
এনএইচ