tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৫২ পিএম

লাশ পুড়িয়ে দেয়ার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই : অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার


Gaibandha_09_09_2024

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, যারা গুলি চালিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে লাশ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় তাদের বিচার করতেই হবে। আমরা এই নির্মম, নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।


সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) গাইবান্ধা জেলা জামায়াত আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে গাইবান্ধায় শহীদ ৬ পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এ দেশকে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে যারা মুক্ত করেছে সেই সকল শহীদদের প্রতি আমরা চির কৃতজ্ঞ। আমরা সর্বাবস্থায় সেই সকল শহীদ পরিবারের পাশে আছি। আজ আমাদের দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। এখন দেশকে নতুন করে গড়তে হবে। যারা শহীদ হয়েছেন তারা আমাদের জাতীয় বীর। শহীদ পরিবারের স্বজনদের চোখের পানি ইতিহাস হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসে ফ্যাসিবাদের পালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস পড়বে।

তিনি আরও বলেন, “যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করে গণহত্যা চালিয়েছে, জামায়াত নেতৃবৃন্দকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে, বহু মানুষকে গুম করেছে দেশের মানুষ তাদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না। ৫ আগষ্টের পরাজিত গোষ্ঠী হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে দাঙ্গা বাধিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। অথচ তাদের দ্বারাই সবচেয়ে বেশী হিন্দু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলের অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী সকলে মিলে আমরা অসাম্প্রদায়িক শান্তি-স্বস্তির দেশ গড়তে চাই।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছিলো, ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিলো। ফ্যাসিবাদী সরকারের অত্যাচারী শাসক শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ এই বাংলার মাটিতে স্বৈরাচারী হিসাবে আখ্যায়িত হয়ে জনরোষে পড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

আবার ভারতে বসে বাংলাদেশের মাটিতে রেখে যাওয়া দাসদের নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র করার অপচেষ্টা করছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র আপামর জনতাকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করা হবে। বিগত ১৫ বছর যেভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জুলুম-নির্যাতন ও গুম করেছে, হত্যা করেছে সেই স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের এমন নৃশংস রাজনীতি এই বাংলার জনগণ আর কখনও মেনে নিবে না।

তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত খুনি হাসিনা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিচারের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এতে শতভাগ সহযোগিতা করবে।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, স্বৈরাচারের দোসররা আমাদের কাজে যেনো বাধা তৈরি করতে না পারে। ছাত্রজনতার বিপ্লবের সময় আওয়ামীলীগ ও হাসিনার দোসররা হাজার হাজার খুনের নেতৃত্ব দিয়েছে। নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে লাশ বিকৃত করেছে। লাশ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী নেতাদের নামে মিথ্যা সাজানো বানোয়াট মিথ্যা এজাহার ও স্বাক্ষী, বাদী বানিয়ে বিচারের নামে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার কোনটির সাথে আমাদের নেতাকর্মীগণের কোনো সম্পর্ক ছিল না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বহু মানুষ নিহত হয়েছে, অসংখ্য মানুষ পঙ্গু হয়েছে। আবু সাঈদের শহীদের ঘটনা পুরো বিশ্বকে জাগিয়ে তুলেছে। সন্তান হারানো পিতা-মাতাই জানেন তারা কী হারিয়েছেন। আমরা শুধু সান্ত্বনা দিতে পারি। কিন্তু তাদের হৃদয় জানে সন্তান হারানোর বেদনা কত কষ্টের।

মতবিনিময় সভা শেষে সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্চ থেকে নেমে দর্শকসারিতে বসা শহীদ পরিবারের সদস্যদের কাছে গিয়ে তাদের সান্ত্বনা দেন এবং প্রত্যেক পরিবারকে ১ লক্ষ করে টাকা তুলে দেন। এর আগে তাদেরকে ১ লক্ষ করে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে।

বিশেষ অতিথি সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বিগত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে কেবলমাত্র ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ ছাড়া সবাই অংশগ্রহণ করেছিলো। ছাত্ররা এদেশের মাননষকে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ থেকে উদ্ধার করেছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার আমাদের দুর্নীতিমুক্ত ২ জন মন্ত্রীসহ মোট ৭ জন নেতাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে। পতিত জালিম সরকার সারা দেশে জামায়াতের ৪০০ নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে। এই জালিম সরকার হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে ৪ বছরের শিশু পর্যন্ত হত্যা করেছে। অবশ্যই এদের বিচার করতে হবে।”

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও গাইবান্ধা জেলা আমীর মোঃ আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি মাওলানা জহুরুল হক সরকারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ও গাইবান্ধা জেলার সাবেক আমীর ডা. আব্দুর রহিম সরকার।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমীর বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আব্দুল ওয়ারেছ, অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, জেলা সহকারী সেক্রেটারি সৈয়দ আব্দুস সালেক, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা সাইদুর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের গাইবান্ধা জেলা সভাপতি জনাব নুরুন্নবী প্রধান, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম মন্ডল, মোঃ ফয়সাল কবির, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি জনাব ওমর সানি আকন্দ, জেলা সেক্রেটারি ফেরদৌস সরকার রুম্মানসহ উপজেলা নেতৃবৃন্দ।

প্রেসবিজ্ঞপ্তি//এমএইচ