tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৪ পিএম

একের পর এক ‘ড্রাকোনিয়ান আইন’ তৈরি করছে সরকার : রিজভী


রিজভি

সরকারের দুঃশাসন, লুটপাট ও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ যাতে কোনো কথা বলতে না পারে সেজন্যই একের পর এক ‘ড্রাকোনিয়ান আইন’ তৈরি করছে সরকার- এমন মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী ।


বর্তমানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ছিটেফোঁটাও নেই।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার দুঃশাসনের প্রকোপ বৃদ্ধির জন্য আরো মরিয়া হয়ে উঠেছে। ভোটারবিহীন অবৈধ ক্ষমতার গরিমায় মন্ত্রীরা জুলুমের তীব্রতা বৃদ্ধির হুমকি দিয়ে জনসমাজে ভীতি ছড়ানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।’

তিনি বলেন, “আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে বলেছেন, ‘মিথ্যা তথ্য ও মিথ্যা খবর দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বন্ধে সংসদে আইন আনা হবে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘অলরেডি একটি আইন আছে যেটা হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, আরো কিছু আইন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সংসদে আসবে।’ অর্থাৎ নাগরিকদের ওপর নজরদারী আরো তীব্র হবে, এটি সমগ্র জাতিকে পর্যবেক্ষণে রাখার এক নতুন কালো আইন প্রণয়নের আলামত।”

‘সরকারের দুঃশাসন, লুটপাট ও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ যাতে কোনো কথা বলতে না পারে সেজন্যই একের পর এক ‘ড্রাকোনিয়ান আইন’ তৈরি করছে সরকার। বর্তমানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ছিটেফোঁটাও নেই। সরকারি সংস্থাগুলোকে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের জন্য নানাভাবে কাজে লাগিয়ে তাদের মিথ্যা জয়গান প্রচার করেও শান্তি পাচ্ছে না তারা। তারপরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশী ও বিদেশী কিছু মিডিয়ায় তাদের অনেক অপকর্ম প্রকাশিত হয়। সেটিও যাতে প্রকাশ হতে না পারে সেজন্য কিছুদিন আগে সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এবার ডামি নির্বাচনে জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখাত হয়ে মানুষের কণ্ঠকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে আইনমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে হুমকি দিচ্ছেন। দেশে মতপ্রকাশ বা বাকস্বাধীনতা প্রয়োগের জন্য অনেক মানুষকে যেভাবে মামলা ও জেল-জুলুম ভোগ করতে হয়েছে, এবার জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিবে। ডামি সরকারের বিরুদ্ধে কেউ সমালোচনা করতে পারবে না,’ বলেন রিজভী।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস দশার কথা বিবেচনা না করে আওয়ামী ডামি সরকার আবারো বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করে যখন ইচ্ছা বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারবে সরকার। এই স্বেচ্ছাচারী আইন অনুমোদন করিয়ে জনগণকে নিপীড়ন ও ফতুর করার নীতি গ্রহণ করেছে মাফিয়া সিন্ডিকেট সরকার।’

তিনি বলেন, ‘গণমানুষ, ভোক্তা অধিকার কিংবা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যুক্তি-অনুরোধ কোনোকিছুরই তোয়াক্কা না করে যখনই লুটেরা সরকারের টাকায় টান পড়ছে তখনই গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। লুটেরা ডামি সরকার আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে সাধারণ জনগণের পকেট শূন্য করার নীতি গ্রহণ করেছে। কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার বেগমপাড়ায় দামি বাড়ি-গাড়ির জন্য টাকা দরকার। এজনই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি। বেগমপাড়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অবৈধ স্বর্গ বানানোর প্রতীক।’

‘জনগণের রক্তপান করে আওয়ামী আগ্রাসী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্য সরকার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে। গ্যাস সংকট জিইয়ে রেখে এলএনজির ব্যবসার দ্বার খোলা হয়েছে। সরকারঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরছেন। এটা স্পষ্ট যে, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের লোকসান আসলে সংশ্নিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান ও দায়িত্বশীলদের অব্যবস্থাপনা, অবহেলা আর দুর্নীতির ফল। কিন্তু এর দায় মেটাতে হচ্ছে জনগণকে।’

রিজভী বলেন, ‘এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়ার ধাক্কায় মানুষের জীবন চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। অসহনীয় পরিস্থিতিতে পড়েছেন শ্রমিক, কৃষক, চাকরিজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। চিকিৎসা, লেখাপড়া, বিনোদন, কাপড়-চোপড় এমনকি খাওয়ার খরচ মেটাতে না পেরে অসীম হতাশায় দিন যাপন করছেন, কেউ কেউ আত্মহত্যাও করছেন। সরকার জনগণের জীবন-জীবিকার কোনো তোয়াক্কা করে না। এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে তীব্র লড়াই গড়ে তোলার পাশাপাশি গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

এসএম