গাজায় ত্রাণ কার্যক্রম ভেঙে পড়ার আশঙ্কা জাতিসংঘের
Share on:
গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য কাজ করা সাহায্য সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর বিকল্প আর কোনো কিছুই হতে পারে না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ইসরায়েলে হামাসের হামলার সময় সংস্থাটির সদস্যরা জড়িত ছিল, দেশটির এমন অভিযোগের পর গাজায় কর্মরত সংস্থাটির সমন্বয়ক এক প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন। গাজায় ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে ইসরায়েল। খবর এএফপির।
ইসরায়েলের অভিযোগের পর ইউএনআরডব্লিউএর জন্য অর্থ সাহায্য প্রদান স্থগিত করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও জাপান। তবে সহায়তা যেন বন্ধ করে না দেওয়া হয় সে লক্ষ্যে দাতা দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘের অধিকার বিষয়ক সংস্থা, ইউনিসেফ ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধানরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি ইউএনআরডব্লিউএর জন্য অর্থ সহায়তা বন্ধ হয়ে যায়, তবে গাজায় দুর্যোগপূর্ণ মানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
জাসিংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তসমন্বয়ের জন্য গঠিত স্ট্যান্ডিং কমিটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউএনআরডব্লিউএর তহবিল প্রত্যাহার করে নিলে গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ভেঙে পড়বে। এতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডসহ গোটা অঞ্চলে মানবাধিকার ও মানবিক সহায়তার প্রশ্নে চরম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ইসরায়েল আবারও অভিযোগ করেছে, হামাস ইসরায়েলে হামলা চালাতে ইউএনআরডব্লিউএর অবকাঠামো ব্যবহার করেছে। এই অভিযোগের পর বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আরও তুঙ্গে ওঠে। তবে সংস্থাটি অভিযোগের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ হিসেবে তাদের ১২ জন কর্মীকে চাকরিচ্যুত করে। পাশাপাশি এটাও জানায় দাতারা সাহায্য বন্ধ করে দিলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ ফিলিস্তিনিরা।
ইসরায়েল এর আগেও বলেছিল, গাজা যুদ্ধ থেমে যাবার পরে তারা ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে। ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র এইলোন লেভি এ বিষয়ে বলেন, সংস্থাটি ব্যাপক হারে ‘সন্ত্রাসীদের’ চাকরিতে নিয়োগ দিয়েছে, হামাসের সামরিক তৎপরতায় নিজেদের অবকাঠামো ব্যবহার করতে দিয়েছে এবং গাজা উপত্যকায় সাহায্য সামগ্রী বিতরণে হামাসের ওপর নির্ভর করেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা গত অক্টোবর থেকে ইউএনআরডব্লিউএকে এ পর্যন্ত ১৩১ মিলিয়ন ডলার প্রদান করেছে, যা সংস্থাটির কাজকে ভীষণ সহায়তা করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ইইএনআরডব্লিউএর মতো এত ব্যাপক মানবিক সহায়তার কাজ আর কেউ করতে পারছে না। সহায়তামূলক কাজ চলুক, এটাই আমরা চাই। তবে খারাপ কাজের সঙ্গে যে কেউ জড়িত হলে, তার তদন্ত করা দরকার। আমরা চাই, জাতিসংঘ এই বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে হামাস এক হাজার ১৪০ জনকে হত্যা করেছে। এদের বেশির ভাগই ছিল নিরীহ বেসামারিক লোক। এ ছাড়া হামাস ২৫০ জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে আসে, যাদের মধ্যে ১৩২ জন এখনও তাদের হাতে বন্দি রয়েছে।
হামাসের এই তৎপরতার পাল্টা জবাব হিসেবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণে এ পর্যন্ত গাজায় ২৬ হাজার ৭৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের বেশির ভাগই নিরীহ নারী ও শিশু।
এসএম