ঈদ আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে পারলেই পূর্ণতা আসবে : ছাত্রশিবির
Share on:
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলাম ঈদে সুবিধা বঞ্চিত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে বলেছেন, ঈদ মানে আনন্দ। আর এ আনন্দ ধনী-গরীব সবার জন্য। এখানে কোন বৈষম্য কাম্য নয়। সবার মাঝে ঈদ আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে পারলেই পূর্ণতা আসবে।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) তিনি রাজধানীতে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার কর্মজীবিদের মাঝে ফুডপ্যাক উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শিবির সেক্রেটারি বলেন, আবারো খুশির বার্তা নিয়ে ঈদ সমাগত। ঈদ আনন্দ পরিপূর্ণ করতে যার যার সাধ্য মত চেষ্টা চলছে। কিন্তু দেশের জনসংখ্যার বিশাল অংশ সুবিধা বঞ্চিত। যাদেরকে বরাবরই পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়। শুধু পাশ কাটিয়ে যাওয়া নয় বরং তাদের নিয়ে এখন উপহাসও করা হচ্ছে। সম্প্রতি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে কোন সমস্যা নেই। মানুষ ভাল আছে। যা অসহায় দরিদ্র মানুষদের সাথে অমানবিক তামাশা ছাড়া কিছু নয়। দেশের বিশাল সংখ্যক মানুষ দরিদ্র সিমার নিচে বসবাস ও মানবেতর জীবন যাপন করছে। মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে নিরব হাহাকার চলছে। অপশাসন ও দূর্নীতির কারণে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই রমজানেও বহু দুস্থ অসহায় মানুষের খাদ্য কষ্টে থেকে রোজা থাকার করুণ চিত্র গণমাধ্যমের কল্যাণে দেশবাসী দেখেছে। এ অবস্থায় দরিদ্র মানুষদের নিয়ে সরকারের উপহাস করা চরম দায়িত্বহীনতা ও অমানবিকতার বহি:প্রকাশ। সরকারের এমন দায়িত্বহীন অবস্থানের কারণেই সামাজিক বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করছে। অসহায় গরীব মানুষদেরকে দিন দিন অসহায়ের চরম মাত্রায় পৌঁছে দিচ্ছে। তাছাড়া ঈদে সমাজের বিত্তবানরাও তেমন দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে না। অথচ রমজান আমাদের সমাজে সাহায্য-সহযোগিতা, সমবেদনা, সহমর্মিতা প্রদর্শনের শিক্ষা দেয়। ঈদ সবার জন্য এবং সার্বজনীন উৎসব। এ আনন্দে দরিদ্র মানুষগুলোকে অসহায় দর্শক বানানো নিত্যান্তই অমানবিকতা।
অন্যদিকে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীসহ অসংখ্য আলেম-ওলামা কারাগারে রয়েছে। তাদের পরিবার গুলোতে ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। গ্রেফতারকৃত জামায়াত-শিবিরের সকল নেতাকর্মী যাতে তাদের পরিবার-পরিজনদের সাথে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে পারেন সে জন্য পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্বেই তাদের মুক্তি দেয়ার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, সমাজের অসহায়, হতদরিদ্র, ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট অনুধাবন করার মোক্ষম সময় হচ্ছে মাহে রমজান। মাহে রমযান আমাদের ত্যাগ-কুরবানীর প্রশিক্ষণ দেয়। সেই প্রশিক্ষণের উত্তম প্রতিফলন হবে যদি সমাজের সবাই যার যার পাশের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সাথে ঈদ আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে পারি। ইসলামের সামাজিক শিক্ষাও এটাই। দেশের অবহেলিত মানুষের প্রধান অভিভাবক রাষ্ট্র। বিত্তশালীদের উপর গরীবের হক আল্লাহ প্রদত্ত। তাদের পাশ কাটানোর প্রবণতা অমানবিক। সরকার ও বিত্তশালীরা যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে সহজেই ঈদের আনন্দ পূর্ণতা পাবে। ছাত্রশিবির সবার সাথে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে সাধ্য অনুযায়ী প্রতিবছরই অসহায় দুস্থ মানুষদের সহায়তা করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। সুতরাং সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। সবার মাঝে ঈদ আনন্দ যেন সমানভাবে ছড়িয়ে যায় সেজন্য সামর্থের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে অসহায় দরিদ্র মানুষদের সহায়তা করতে হবে।
এন