আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় শিবিরের নিন্দা
Share on:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ সশস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
সোমবার (১৫ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতিতে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।
যৌথ বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, “রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসনে বসে সম্পূর্ণ দলীয় মনোভাব ও রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে জনগণের যৌক্তিক দাবি-দাওয়াকে বিবেচনায় না নিয়ে স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ পরিচালনার আরও একটি নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করল হাসিনা সরকার। রোববার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় ব্যর্থ চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের যৌক্তিক দাবির প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে শেখ হাসিনা বক্তব্য প্রদান করেন।
এর প্রতিবাদে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে। বিপরীতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহড়া দিতে থাকে। একপর্যায়ে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় তারা। সোমবার দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এলাকায় জড়ো হলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রলীগ বহিরাগত নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে নারীসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়। এর আগে সকালে ইডেন কলেজের ছাত্রীদেরকে রুমে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।
এছাড়াও বিভিন্ন ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক রাফিকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ। আমরা এই ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তারা বলেন, দেশ ছাত্রলীগকে ইজারা দেওয়া হয়নি যে, যখন-তখন দেশের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলে পড়বে। ছাত্রসমাজ দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদের এই শ্রদ্ধাকে ছাত্রলীগ দুর্বলতা মনে করলে এর জন্য চরম মাশুল দিতে হবে। ছাত্রসমাজ আজ জেগে উঠেছে। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে। যদি ছাত্রলীগ তাদের এসব গণবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে ফিরে না আসে, তাহলে ছাত্রজনতা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদেরকে উপযুক্ত জবাব দিতে বাধ্য হবে।
আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করছি যে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনে ছাত্রলীগ বরাবরই বিপক্ষ অবস্থান নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে আসছে। ২০১৮ সালে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন ও ‘কোটা সংস্কার’ আন্দোলনে হেলমেট পরে হাতুড়ি দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এছাড়াও ধর্ষণ, খুন, ভর্তি বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ঘুষ ও দুর্নীতিসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই, যার সাথে ছাত্রলীগ জড়িত নেই। ধারাবাহিকভাবে তাদের এই অপকর্মের সামনে প্রশাসন সব সময় নীরব ভূমিকা পালন করে আসছে। এমনকি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসনে বসে ছাত্রলীগকে অন্যায় কর্মকাণ্ড থেকে নিবৃত্ত করার পরিবর্তে অন্যায় করার জন্য উস্কে দেওয়া হচ্ছে। আমরা মনে করি আজকের এই হামলা সরকারের উস্কানিতে সংঘটিত হয়েছে।
আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সেইসাথে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ও তাদের প্রভুদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় এর প্রেক্ষিতে সৃষ্ট যেকোনো পরিস্থিতির জন্য ছাত্রলীগ এবং পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আওয়ামীলীগই দায়ী থাকবে।”
এফএইচ