আল্লাহ তাআলা বলেন, হজের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস রয়েছে। এ মাসগুলোতে যে কেউ হজ করার মনস্থ করবে, তার জন্য হাজের মধ্যে স্ত্রী সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও ঝগড়া-বিবাদ বৈধ নয় এবং তোমরা যে কোন সৎ কাজই কর, আল্লাহ তা জানেন এবং তোমরা পাথেয়ের ব্যবস্থা করবে আর তাক্বওয়াই শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হে জ্ঞানী ও বিবেকবানরা! আমাকেই ভয় করতে থাক। (সুরা বাকারা: ১৯৭)
এ মাসগুলো হজের মাস হওয়ার অর্থ এই নয় যে এই মাসগুলোর যে কোনো দিন হজের যে কোনো কাজ করা যাবে। বরং এর অর্থ হলো, এই মাসগুলোতেই হজের ইহরাম বাঁধা ও হজের আমলগুলো সম্পন্ন করতে হয়। শাওয়াল মাসের আগে হজের ইহরাম বাঁধা যায় না। শাওয়ালের শুরু থেকে হজের ইহরাম বাঁধা যায়। শাওয়ালের প্রথমেই কেউ যদি হজের নিয়তে ইহরাম বাঁধে এবং তাওয়াফ ও সাঈ করে, তবে তা হজের জন্যই হবে। কিন্তু আরাফায় অবস্থান এবং এর পরবর্তী আমলগুলোর জন্য তো নির্ধারিত দিন আছে সেগুলো নির্ধারিত দিনেই করতে হবে।
হজের মাসসমূহের মধ্যে শুধু হজের পাঁচদিন অর্থাৎ জিলহজ মাসের ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৩ তারিখে ওমরাহ করা মাকরুহ তাহরিমি। এ দিনগুলোতে ওমরাহ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া হজের মাস শাওয়াল ও জিলকদে ওমরাহ করা যায়। জিলহজ মাসের প্রথম আট দিনও ওমরাহ করা যায়।
অনেকে হজের মাসসমূহে ওমরাহ করাকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণও বলেছেন। কারণ নবিজি (সা.) তার সবগুলো ওমরাহ হজের মাসসমূহেই আদায় করেছিলেন। হোদায়বিয়ার ওমরাহ নবিজি আদায় করেছিলেন জিলকদ মাসে। কাজা ওমরাহ আদায় করেছেন জিলকদ মাসে, জি‘রানার ওমরাহও আদায় করেছেন জিলকদ মাসে। আর বিদায় হজের সাথের ওমরাহও ছিল জিলকদ মাসে।
কেউ যদি নবিজিকে (সা.) অনুসরণের নিয়তে হজের এই তিন মাসে ওমরাহ পালন করেন, তাহলে তিনি ওমরাহর পাশাপাশি নবিজিকে (সা.) অনুসরণের কারণেও সওয়াব লাভ করবেন এই আশা করা যায়।
যদিও নবিজির (সা.) কোনো হাদিসে সুস্পষ্টভাবে হজের মাসে ওমরাহ করার বিশেষ কোনো ফজিলত বর্ণিত হয়নি। হাদিসে সুস্পষ্টভাবে রমজান মাসের ওমরাহকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ বলা হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, রমজানের ওমরাহ একটি হজের সমতুল্য অথবা আমার সঙ্গে হজ করার সমতুল্য। (সহিহ বুখারি: ১৭৮৬, সহিহ মুসলিম: ১২৫৬)
এমএম