কৃষকরা জানান, যশোরের বিভিন্ন এলাকায় গত দুই সপ্তাহের তীব্র তাপদাহ শেষে, আজ ১৮০ কিলোমিটার গতির কালবৈশাখির ঝড়ের সঙ্গে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। একপর্যায়ে বৃষ্টি কমলেও প্রচুর পরিমাণে শিলা পড়তে থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে শিলাবৃষ্টির কারণে বোরো মৌসুমে উঠতি ধানের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে চৌগাছা, সদর ও বাঘারপাড়া উপজেলাতে।

অন্যদিকে সিংহঝুলী, বলিদাপাড়া, ঝাউতলা, জামালতা, জগন্নাথপুর, কয়ারপাড়া মাঠের ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকার ২–৩ হাজার হেক্টর জমির বাসমতি ধানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেতের বাসমতি ও মিনিকেট ধান ঝরে গেছে।

এদিকে পৌর এলাকার পাঁচনমনা, ইছাপুর, তারিনিবাস, কংশারীপুর, স্বরূপদাহ, চৌগাছা সদর ইউনিয়নের লস্কারপুর, পিতম্বরপুর, মন্মথপুর মাঠের ধানেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুধু ধান নয়, এসব ক্ষেতের পটল, কচুসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি এবং আম-লিচুরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া বাঘারপাড়ায় কৃষকের পাকা ধান কেটে স্তুপ করা গাদায় বজ্রপাতে কয়েকটি মাঠে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটেছে।

কৃষক শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ‘এবার ১১ বিঘা জমিতে ধান করেছিলাম। ৪ বিঘা কাটা হয়নি, দেড় বিঘা কেটে ক্ষেতেই রেখেছিলাম। সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে। অন্যদিকে যেগুলো কাটা হয়নি, সেগুলো সব ঝরে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এতে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, আকস্মিক এই শিলাবৃষ্টিতে যশোরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চৌগাছায়। মাঠে ৭০–৮০ শতাংশ ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ বছর এক লাখ ৫৭ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। এর মধ্যে সোমবার পর্যন্ত কাটা হয়েছে ৫১ শতাংশ জমির ধান।

তিনি আরও বলেন, এখন কেটে রাখা ধান ক্ষেত থেকে পানি বের করার পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি, আগামীকাল থেকে আবহাওয়ার উন্নতি ঘটবে। তাই আমরা চাষিদের পাকা ধান দ্রুত কেটে নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।

এমএম