চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টম হাউজকে ছয় হাজার ৭০৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১৬ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় করেছিল বেনাপোল কাস্টম হাউজ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। সেখানে আদায় হয়েছিল ছয় হাজার ১৬৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
বেনাপোল কাস্টম হাউজ সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে বেনাপোল দিয়ে গাড়ির চেসিস আমদানি হয়েছে মাত্র এক হাজার ৫২৮ পিস। এরমধ্যে ২০২০ সালে আমদানি করা হয়েছে ৩৫১, ২০২১ সালে ২৭১, ২০২২ সালে ২৪৮, ২০২৩ সালে ২৯৮, ২০২৪ সালে ২৭০ এবং ২০২৫ সালে (জুলাই-মার্চ) আমদানি হয়েছে ৯০ পিস। অথচ এর আগে ২০১৬ সালে চেসিস আমদানি হয়েছিল ৭৯ হাজার ৭১৪ পিস। এছাড়া ২০১৭ সালে ৯১ হাজার ৪৮১ পিস, ২০১৮ সালে ১০ লাখ ৬৯ হাজার ৭১ পিস এবং ২০১৯ সালে ৫২ হাজার ৩২০ পিস চেচিস আমদানি হয়েছিল।
এ বিষয়ে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, গত অর্থবছরে সরকারের মেগা প্রকল্পের মালামাল বেনাপোল দিয়ে এসেছিল। এতে করে কাস্টমসের রাজস্ব আদায় বেড়েছিল। আশা করছি, চলতি বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য গতি ফিরে পাবে।
‘বিগত ৫-৬ বছর রাজস্ব আদায়ের হার ভালো ছিল না। কারণ উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি কম হয়েছে। গাড়ির চেসিস ও মোটর পার্টস আমদানি বেশি হলে রাজস্ব আহরণ বাড়ে। কম শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি হলে রাজস্ব কমবে। এটিই স্বাভাবিক’, যোগ করেন তিনি।
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান জানান, করোনার কারণে সব ব্যবসায় ধস। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাড়ির ব্যবসায়। কারণ, মানুষের কাছে নগদ টাকার প্রবাহ বেশি থাকলে তখন তারা গাড়ি কিনতে ও পার্টস বদলাতে উৎসাহী হন। আবার বেনাপোল বন্দরের সক্ষমতার অভাবের কারণে অনেকে বন্দর ছেড়ে অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছেন।
র্যাংগস মোটরস যশোর অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার শুভংকর বিশ্বাস জানান, গত ৫-৬ বছর ধরে দেশে গাড়ির ব্যবসায় চরম মন্দাভাব বিরাজ করছে। যে কারণে কোম্পনিগুলো গাড়ি বা চেচিস আমদানি কমিয়ে দিয়েছে।
করোনার কারণে দেশে ব্যবসায় মন্দা থাকায় গাড়ির চেসিস আমদানি কমেছে বলে জানান বেনাপোল কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার এইচএম শরিফুল হাসান।
তিনি বলেন, আশা করা হচ্ছে চলতি বছর থেকে আমদানি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। বেনাপোল বন্দরের সক্ষমতার অভাবের কথা ব্যবসায়ীরা বলছেন। আমরা বন্দরের পরিধি বাড়াতে চিঠি দিয়েছি।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নে নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আমদানি পণ্যের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সব ধরনের সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি।
এমএম