যৌতুকের দাবিতে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির অমানবিক নির্যাতনের কাছে হেরে যাওয়া গৃহবধু শাহিনা বাচার আকুতি জানাচ্ছে প্রশাসন সহ সুশীল সমাজের নিকট।
জানা গেছে, গত তিন বছর আগে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের হাউদারভিটা গ্রামের মুসলিম আলীর ছেলে আলমগীর হেসেন মিলনের সাথে সামাজিক ভাবেই বিবাহ হয় সীচা বাজারের শাহজাহান মিয়ার কন্যা শাহীনাজ আক্তারের। বিয়ের পরপরই জামাই কে ব্যবসার জন্য নিজ থেকেই ৬ লক্ষ টাকা দেয় গৃহবধু শাহীনার পরিবার।
এর পরও বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই লোভি শ্বশুড় বাড়ির লোকজন যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ শাহিনার ওপর চালাতো স্বামী, দেবর, শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে অমানবিক নির্যাতন।
এতকিছুর মাঝেও শাহীনার কোলজুড়ে জন্ম নিয়েছে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের। এরপর যেন আরো বাড়তে থাকে নির্যাতনের মাত্রা।
শাশুড়ি-ননদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে কোলের শিশুকে নিয়ে বছরখানেক আগে বাবার বাড়িতে থাকেন বেশ কিছু দিন।
এরপর আবার মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে আসেন শ্বশুর শ্বাশুড়ি । তবে বাড়িতে নিয়ে আসা মাত্রই যেন আবার পূর্বের রুপে ফিরে শ্বশুর পরিবারের লোকজন এবং আগের চেয়েও দিগুন বেগে শুরু করে নির্যাতন।
সর্বশেষ গত ২১ এপ্রিল আবারো গৃহবধু শাহিনার বাবার অবশিষ্ট ২০ শতাংশ জমি বিক্রির জন্য চাপ দিতে থাকে শ্বশুড় বাড়ির লোকজন। এ বিষয়ে শাহীনা আপারগতা প্রকাশ করেলে স্বামী আলমগীর হোসেন মিলন বাঁশের লাঠি দিয়ে মাথায় এবং দু-হাতে সজোড়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। অন্যদিকে দেবর জাহাঙ্গীর কোমরে লাথি মারে। তৎক্ষনাৎ শাহিনা মাটিতে পড়ে যায় এবং চিৎকার করতে থাকে।
পরে শ্বশুর-শ্বাশুড়ি শাহিনার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে শাহীনা অসুস্থ হয়ে অচেতন হয়ে পরলে পরিবারের সকলে মিলে শাহিনার মুখে কীটনাশক বিষ ঢেলে দেয়। পরে শাহীনাজ ছটফট করতে থাকলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে ফেলে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানিয় লোকজন অসুস্থ্য শাহিনাকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।বর্তমানে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন অসুস্থ্য শাহিনা।
এ ঘটনায় শাহীনার বাবা শাহাজাহান বাদি হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করলেও (মামলা নং ৪২/১৩৮) আসামীরা রয়েছে ধরা ছোয়ার বাহিরে । এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এমএম