শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
হৃদয় উপজেলার পশ্চিম যৌতা গ্রামের রিকশাচালক আনসার হাওলাদারের ছেলে। জীবিকার তাগিদে ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করলেও পরে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হয়ে ওঠেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ‘জুলাই বিপ্লব’-এর সময় হৃদয়ের মাথায় পুলিশের তিনটি গুলি লাগে। তৎকালীন সরকারের কঠোর দমননীতির কারণে তিনি দীর্ঘদিন গোপনে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন।
সরকার পরিবর্তনের পর ৫ আগস্ট হৃদয়কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথা থেকে দুটি গুলি অপসারণ করা গেলেও, একটি গুলি জটিল স্থানে থাকায় তা বের করা সম্ভব হয়নি।
হৃদয়ের পরিবার জানায়, গত ২ এপ্রিল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন হৃদয়। মাথাব্যথা ও জ্বর তীব্র হলে ৪ এপ্রিল দুপুরে তাকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। তবে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে তাকে সেখানে নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে বিকেলে হৃদয়ের মৃত্যু হয়।
হৃদয়ের বাবা আনসার হাওলাদার বলেন, ‘ছেলের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনি। নিজের রিকশা ও একটি গরু বিক্রির টাকা দিয়ে যতটুকু পেরেছি ততটুকু চেষ্টা করেছি। হৃদয়ের মাথার তিনটি গুলির দুটি বের করেছেন ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা। আরেকটি গুলি বের করা সম্ভব হয়নি। বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা গেলে আমার ছেলে হয়তো বেঁচে থাকতো।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আ. রউফ বলেন, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে হৃদয়কে হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি। পরিবার যথাসময়ে বরিশাল নিতে পারেনি। এখানেই বিকেল ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এইচআর