তিনি বলেন, চিকিৎসায় অর্থের দিকে না তাকিয়ে চিকিৎসাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রোববার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীয় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
নূরজাহান বেগম বলেন, জুলাই ফাউন্ডেশন আহতদের কিছু অর্থ সহায়তা দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় যারা শহীদ হয়েছে তাদেরকে ৩০ লাখ টাকা করে দিচ্ছে। এর সাথে চিকিৎসার কোনো সম্পর্ক নেই। চিকিৎসার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তাদের দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে ২৫ কোটি ৩৭ লাখ বরাদ্দ পেয়েছিলাম। সেখান থেকে আমাদের প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বাকি টাকাটা আমাদের কাছে আছে। তা জুলাইয়ে আহতদের মধ্যে আরও যাদের বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন হবে তাদের পেছনে খরচ করা হবে।
এছাড়া দেশের হাসপাতালের চিকিৎসার খরচের বিষয়টি স্ব স্ব হাসপাতাল বলতে পারবে এবং সর্বমোট খরচের হিসেব তার কাছে নেই বলে জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। তবে আরেকটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আহত ও নিহতদের তালিকা প্রণয়ণে ধীরগতির বিষয়ে নূরজাহান বেগম বলেন, বাংলাদেশে এখনও ভুয়া মুক্তিযুদ্ধা বের হচ্ছে। তাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি, জুলাইয়ের তালিকায় যেন কোনো ভুয়া লোক যুক্ত না হয়।
এ সময় আহতদের চিকিৎসার জন্য উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে পাঠানোর পাশাপাশি পাকিস্তানে পাঠানোর কারণ জানতে চাওয়া হয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, পাকিস্তানে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ। সেখানে মাইনে বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসায় একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল আছে। যেখানে হাত-পা ভাঙার বিশেষায়িত চিকিৎসাটা ভালো বলে আমাদের যুক্তরাজ্যের একজন চিকিৎসকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আমরা তার পরামর্শে এ উদ্যোগ নিয়েছি।
তালিকা প্রণয়নের বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান বলেন, জেলা কমিটির মাধ্যমে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আমাদের কাছে এখনও কিছু আবেদন আছে। এটি একটি বিরাট কর্মযজ্ঞ। এখানে ভালো ত্রুটির একটা সম্ভাবনা থাকে। আমরা চেয়েছি প্রকৃত যোদ্ধারা যেন তালিকায় আসে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু জাফর বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর আহতদের তৃপ্তি ছিল যে, তারা দেশের জন্য কিছু করেছে। কিন্তু এই সরকার চলে গেছে তাদের ভবিষ্যৎ কি হবে তা নিয়ে দ্বিধা ছিল। আমরা তা সমাধানের চেষ্টা করেছি। তারা যেন চিকিৎসা নিতে বিড়ম্বনার শিকার না হয়, তার জন্য প্রতিটি হাসপাতালে ব্যানারসহ আলাদা কর্নার তৈরি করা হয়েছে। আমরা তাদের হেলথ কার্ড দিয়েছি কিন্তু সেবা পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারিনি। এ বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবুও আমরা আমাদের দায় থেকে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমাদের ব্যবস্থাপনায় কিছু ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি ছিল না। ঢাকা থেকে চিকিৎসা শেষে এলাকায় ফেরার পর যেন জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা পান, তা নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে নতুন করে আরেকটি নির্দেশনা দেব।
এমএম