সোমবার (৫ মে) বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ৯টার দিকে যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে কাতার আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে খালেদা জিয়া ও তার সঙ্গীরা ঢাকার পথে রওয়ানা দেন।

এর আগে বাংলাদেশ সময় রাত সাতটা ৪০ মিনিটে নিজে গাড়ি চালিয়ে মাকে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মায়ের কাছ থেকে আবেগঘন পরিবেশে বিদায় নেন তিনি। এ সময় খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও সেবা-শুশ্রূষা করা প্রত্যেকের কাছ থেকে বিদায় নেন তারেক রহমান। কয়েকজনকে বুকেও টেনে নেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এসময় কাউকে উদ্দেশ্য করে খালেদা জিয়াকে বলতে শোনা যায়, সবাই ভালো থাকো। ছেলের চেয়ে বয়সে ছোট একজনকে বলেন, ‘ভাইয়ার দিকে খেয়াল রেখো (তারেক রহমানকে নেতাকর্মীদের অনেকেই ভাইয়া বলে সম্বোধন করেন) খেয়াল রেখো।’পরে পাশে দাঁড়ানো নাতনি জাইমা রহমানকে বলেন, ‘আব্বুর দিকে খেয়াল রেখো।’

খালেদা জিয়ার সঙ্গে আছেন তার দুই পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান। এছাড়াও আছেন তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. আবু জাফর মো. জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার ও ডা. জাফর ইকবাল; বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ, খালেদা জিয়ার সহকারী মাসুদুর রহমান, মিসেস দিলারা মালিক, তার দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম ও রুপা শিকদার।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি মাঝে কাতারে যাত্রাবিরতি করবে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।

এদিকে ঢাকায় খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার জন্য তার বাসভবন ফিরোজা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই এতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন

বিএনপির চেয়ারপাসন ২০১৮ সালে তৎকালীন শেখ সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারির সময় সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত। এতে তাঁর বিদেশ যাওয়ার পথ সুগম হয়।

এইচআর