মীর্জা মসিউজ্জামান
বুধবার বিকেলে টাইম নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের নাম প্রকাশে অনি”ছুক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সীর মাধ্যমে কয়েক দফায় কর্মীদের পাঠানো হয়েছে। ২ হাজার প্রস্তুত রয়েছে। মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশকে নিশ্চিত করার সাথে সাথে তাদেরকে পাঠানো হবে। তবে সে সময়টি যাতে র্দীঘ না হয় সে জন্য মালয়েশিয়া নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদুতের মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি খুব দ্রতই সমাধান হবে।
আন্দোলনকারীদের সমস্যার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, যাদের মালয়েশিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে সমস্যা হয়েছে যাঁরা যেতে পারেননি, তাঁদের মালয়েশিয়ায় পাঠানো এবং রিক্রোটিং এজেন্সির কাছ থেকে তাঁদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে কর্মীদের যেতে নতুন করে যাতে খরচের বোঝা তৈরি না হয়।
সিনিয়র এ ককর্মকর্তা বলেন, মালয়েশিয়া রাষ্ট্রদুতের সঙ্গে ইতোমধ্যে কয়েক দফায় বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে মালয়েশিয়া রাষ্ট্রদুত কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন। আকামা নিশ্চিত না করে পাঠানো, যে সব কাজে জনবল লাগবে সে সকল কাজে প্রশিক্ষিত না করা, ভাষা বুঝতে না পারা আরও কিছু সমস্যার কথা রাষ্ট্রুদুত আমাদেরকে অবহিত করেছেন। উক্তসমস্যাগুলোছাড়াও বাংলাদেশের এজেন্সি গুলোরও কিছু সমস্যা রয়েছে। সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম অতিরিক্ত টাকা আদায়, ভিসা কনফামেশন না থাকা, মধ্যেসত্তাভোগীরে দৌড়াত্ত, যে এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানো হয় সে সকল এজেন্সির বৈধতা না থাকা। সেগুলোর কারণে কিছুটা জঠিলতা তৈরী হচ্ছে। সেখানে তাদের কাজের ব্যাঘাত হওয়াসহ দেশের ভাবমুরিÍও নষ্ট হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই সেখানে গিয়ে কর¥ীদের অনেক সমস্যায় সম্মুখিন হতে হচ্ছে।
মন্ত্রণালয়-এ কর্মকর্তা জানান, সে সমস্যাগুলো সমাধান করে যে এজেন্সিগুলো তারে মাধ্যমেই প্্রবাসীদেরকে পাঠানো হ”েছ। আর যারা কন্ডিশন পুরণে গাফিলতি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তাছাড়া অনেক রিক্রোটিং এজেন্সিগুলোকে নির্শে দিয়েছি সংশোধন করতে। সেগুলোর বিষয়েও মনিটরিং করা হ”েছ যত দ্রুত সম্ভব সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
সিনিয়র কর্মকর্তা আরও জানান, প্রবাসীদের বিদেশ পাঠানোর ব্যাপারে অনেক বড় বড় সিন্ডিকেট রয়েছে। বরÍমান সরকার সেন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। সেগুলো কাটিয়ে উঠারও চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারী মাসে মালয়েশিয়াগামী কর্মীরা আন্দোলনে নামেন। কর্মীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব গণমাধ্যমকে বলেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কারিগরি কমিটি ও মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারিগরি কমিটি ইতিমধ্যে দুই দফা বৈঠক করেছে। বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে এবং এতে অগ্রগতিও আছে। ফেব্রুয়ারিতে আরেকটা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মালয়েশিয়া একমত হয়েছে। আগামী এপ্রিলের মধ্যে এটি চূড়ান্ত হবে বলে আশা করছেন তিনি।
সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, মালয়েশিয়ার কাছে কর্মীরে তালিকা পাঠানো হয়েছে। আলোচনা শুরু হয়েছে, চলছে। পদ্ধতি এখনো ঠিক হয়নি। মালয়েশিয়ার মন্ত্রী পর্যায়ে প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। তারা সিদ্ধান্ত দিলে ১৫ দিনের মধ্যেই কর্মী পাঠানো শুরু হবে। প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলে প্রবাসীদের জানানো হবে এবং তাঁদের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে কর্মীদের যেতে নতুন করে যাতে খরচের বোঝা তৈরি না হয়।
সবশেষ ২০২২ সালে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালুর পর থেকে একটি সিন্ডিকেটের (চক্র) বির“দ্ধে বাজার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার একপর্যায়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চাপে বিিেশ কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। এর আগে কর্মীদের প্রবেশে ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত ছাড়পত্র নিয়েও ওই সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়া যেতে পারেনি ১৬ হাজার ৯৭০ জন কর্মী। যদিও আন্দোলনরত কর্মীরা সংখ্যাটি ১৮ হাজার বলে দাবি করছেন। এসব কর্মীদের টাকা রিক্রুটিং এজেন্সির কাছ থেকে আদায়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো সরকার।
এমএম